জাতীয়

মেয়েকে আট বছর ধরে ধর্ষণ করেন সৎবাবা!

আট বছর ধরে মেয়েকে ধর্ষণ করে আসছেন সৎবাবা। শুধু তাই নয়, আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে মেয়েটির এক বন্ধুকেও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। 

Advertisement

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনা থানায় বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী মেয়েটি।

মেয়েটির সৎবাবা আরমান হোসেন ওরফে সুমন (৩৮) বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের শব্দ প্রকৌশলী। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী মেয়েটি রমনা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার।

Advertisement

তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। মামলার পর থেকে আসামি আত্মগোপনে রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ধর্ষণের অভিযোগ আনা বাদীর শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। আপাতত ভিকটিম এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।

রমনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান জানান, ধর্ষণ ও সাইবার ক্রাইমের অপরাধে দায়ের করা মামলা নং- ১৩। মামলাটি গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মামলাটি তদন্ত করছে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট। 

থানা সূত্র জানায়, মামলার এজাহারে ওই মেয়ে অভিযোগ করেন, প্রথম বাবার সঙ্গে মায়ের ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ২০০৫ সালে আরমান হোসেনকে বিয়ে করেন তার মা। বিয়ের বছর খানেক পর মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন মেয়েটি। চাকরির কারণে মেয়েটির মা মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের বাড়ি থেকে সকালে কর্মস্থলে চলে যেতেন।

২০০৮ সালের কোনো একদিন দুপুরে মেয়েটিকে বাবা আরমান প্রথম ধর্ষণ করেন। তখন মেয়েটি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছিল। ওই সময় মেয়েটির আপত্তিকর ছবি মোবাইলে তুলে রাখেন আরমান। ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আরমান এরপর থেকে প্রায়ই ধর্ষণ করে আসছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন মেয়েটি।

Advertisement

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মেয়েটি। পরে বাবার চাপেই গর্ভপাত ঘটান। এরপরও থেমে ছিল না তার ওপর নির্যাতন। বাধ্য হয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নিকটাত্মীয়ের বাসায় চলে যান মেয়েটি। সেখানেও পাঠানো হয় কুপ্রস্তাব। মেয়েটির এক বন্ধুকে আপত্তিকর ভিডিও ও অডিও ক্লিপ পাঠান আরমান। 

এছাড়া আরমানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে দুটি নকল আইডি খুলে মেয়েটি তার ছবিযুক্ত করার অভিযোগ আনেন।

ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা এ ধরনের একটি ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে। শিগগিরই আসামিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।

এ ঘটনা সম্পর্কে আরমান হোসেনের সঙ্গে তার মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বুধবার রাত ৮টায় সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী অভিযুক্ত আরমান হোসেন ওরফে সুমনকে গ্রেফতারের কথা জানায় ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট। ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জেইউ/জেএইচ/আরআইপি