কয়েকদিনের টানা বর্ষণে গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার সকাল ৬টা থেকে ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহররক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
Advertisement
এদিকে, গত সোমবার থেকে জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত চলছে। বুধবার সকাল ৯টায় জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩০ মিলিমিটার।
অন্যদিকে, পরিস্থিতি বিরূপ হয়ে ওঠায় বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তা ১৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার সকাল থেকে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
Advertisement
ঘাঘট নদীর পানি মঙ্গলবার সকালে ২৪ সেন্টিমিটার থেকে সন্ধ্যায় বেড়ে ৩৩ সেন্টিমিটার হলেও বুধবার সকালে তা ২ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে করতোয়া ও তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের মানুষ। বৃষ্টিতে এরইমধ্যে অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আবাসিক এলাকাগুলোতে পানি বের হওয়ার জায়গা না থাকায় অনেক এলাকার রাস্তা ডুবে গেছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
বন্যা মোকাবেলায় জেলার বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পানিবৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের মানুষরা ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। খাদ্য ও সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে বন্যার্ত এলাকাগুলোতে। জেলায় বন্যার কবলে পড়ে এরইমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ১৩২টি স্কুল ও মাদরাসা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ইদ্রিশ আলী মোবাইল ফোনে জাগো নিউজকে বলেন, জেলার চার উপজেলার প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ২২৫ মেট্রিকটন চাল ও ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ৯০ মেট্রিকটন চাল ও ছয় লাখ টাকা বন্যাদুর্গত এলাকায় বিতরণের জন্য পাঠানো হয়েছে। আরও বরাদ্দ চেয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানিবৃদ্ধির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রওশন আলম পাপুল/এসআর/পিআর