পবিত্রতা অর্জনের জন্য ওযু করা হয়। শরীয়তের বিধান মতে পবিত্র পানি দিয়ে শরীরের কতিপয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধোয়াকে ওযু বলে। শরীয়তে ওযুর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ওযু ছাড়া নামায হয় না। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন পবিত্র তাই তিনি পবিত্রতাকেই পছন্দ করেন। ওযুকারীর ওযুর অঙ্গগুলো কিয়ামতের দিন ঝলমল করতে থাকবে। তিনটি বিশেষ ক্ষেত্রে ওযুর বিশেষ বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। যথা :১. নামাযের জন্য ওযু করা ফরয।২. কা’বা শরীফ তাওয়াফ করার জন্য ওযু করা ওয়াজিব।৩. কুরআন শরীফ তেলাওয়াতের জন্য, সর্বদা পবিত্র থাকার জন্য এবং গোসলের পূর্বে ওযু করা সুন্নত।অযুর পদ্ধতি :ওযুর পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কালামে পাকে দিয়েছেন এভাবে: ইয়া আইয়্যুহাল্লাযীনা আমানু ইযা কুমতুম ইল্সা-সলাতি ফাগসিলু উজুহাকুম ওয়াআইদিয়াকুম ইলাল মারাফিক্বি ওয়ামসাহু বিরুউসিকুম ওয়াআরজুলাকুম ইলাল কা’বাইনি;অর্থ : হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য তৈরি হও, তখন তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত দু’টি কনুই পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো, মাথার ওপর হাত বুলাও এবং পা দু’টি গোড়ালি পর্যন্ত ধুয়ে ফেলো। (সূরা ৫ মায়েদা : আয়াত ৬)ওযু শুরুর দোয়া : আবু মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি এমন এক সময় নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত ছিলাম, যখন তিনি ওযু করছিলেন এবং তাঁর যবান মুবারক থেকে এ দোয়া উচ্চারিত হচ্ছিল : “হে আল্লাহ! আমার গুনাহ মাফ করে দিন। আমার ঘরের প্রয়োজন মিটিয়ে দিন এবং আমার রিযিকে বরকত দান করুন।” (আন-নাসায়ী)ওযু শেষের দোয়া : উমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযু সম্পন্নের পর নিম্নলিখিত দোয়া করে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেয়া হবে। সে যে কোনো দরজা দিয়েই ইচ্ছা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ মুসলিম ও জামে আত-তিরমিযী) দোয়াটি নিম্নরূপ : আশহাদ আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শরীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ’আবদুহু ওয়া রাসূলুহু। আল্লাহুম্মাজ্’আলনী মিনাত্ তাওয়াবীনা ওয়াজ’আলনী মিনাল মুতাত্বহ্হেরীন।অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো ইলাহ্ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারী লোকদের মধ্যে শামিল করুন। (সহীহ মুসলিম ও জামে আত-তিরমিযী)ওযুর চার ফরয :১. সমস্ত মুখমন্ডল ধোয়া (কপালের উপরিভাগ থেকে থুতনির নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অপর কানের লতি)২. দু’হাতের কনুইসহ একবার ধোয়া৩. মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা এবং৪. দু’পায়ের টাখনুসহ একবার ধোয়া।ওযু ভঙ্গের কারণ :১. পায়খানা প্রস্রাবের রাস্তা দিয়া কোন কিছু বের হওয়া২. মুখ ভরে বমি হওয়া৩. শরীরের কোন জায়গা হতে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া৪. থুথুর সাথে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া৫. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া৬. পাগল, মাতাল, অচেতন হওয়া এবং৭. নামাযে উচ্চস্বরে হাসা।সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজীম ওয়া বিহামদিহি আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা।জাগোনিউজ২৪.কম এর সঙ্গে থাকুন। গুরুত্বপূর্ণ দোয়া শিখে আমল করুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করুন। এইচএন/এমএস
Advertisement