অর্থনীতি

বিদ্যুতে অর্থায়ন থেকে পিছু হটল আইডিবি

সিলেটের ১৫০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২২৫ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে পিছু হটেছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)। 

Advertisement

জানা গেছে, ঠিকাদার নিয়োগে সরকার ও আইডিবির মধ্যে মতের মিল না হওয়ায় প্রকল্প থেকে পিছু হটেছে সংস্থাটি। ফলে নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কামিটির জন্য পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বুধবার (১২ জুলাই) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, আইডিবির অর্থায়নে ৭০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২২৫ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ প্রকল্প ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারিতে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছিল। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৪ সালের ২৬ ফ্রেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আইডিবির ৮৫ মিলিয়ন ডলারের একটি লিজ ফাইনান্সিং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

Advertisement

কিন্তু আইডিবি ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে না বলে জানিয়ে দেয়। সে প্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সম্মতি নিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) ‘বিদ্যুৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন ফান্ড’ এ অর্থায়নে উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করে। কারিগরি মূল্যায়নে ১০ প্রতিষ্ঠান যোগ্য নির্বাচিত হলেও আর্থিক প্রস্তাব জমা দেয় চীনের ঠিকাদার সাংহাই ইলেকট্রিক, চাইনিজ ন্যাশনাল ইলেকট্রিক কোম্পানি (সিএনইইসি) এবং শ্রীলঙ্কার লাক দানাবি। সর্বনিম্ন দর প্রস্তাবকারী সাংহাই ইলেক্ট্রিককে কাজ দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করে পিডিবি। কিন্তু আইডিবি এ ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তোলে। তারা দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরপ্রস্তাবকারী লাক দানাবিকে কাজটি দিতে বলে।

কিন্তু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এতে রাজি না হওয়ায় আইডিবি গত নভেম্বরে প্রকল্পটি থেকে সরে যায় বলে দাবি বিদ্যুৎ বিভাগের।

প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন ও বিউবোর সুপারিশ অনুযায়ী এমএস সাংহাই ইলেক্ট্রনিক গ্রুপ কোম্পনি লিমিটেড চায়নাকে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বমোট খরচ ধরা হয় ৭৬৩ কোটি ৯ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা।

Advertisement

বিদ্যুৎ বিভাগ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস জাগো নিউজকে বলেন, এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কামিটির জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের বিষয়টি কমিটি বিবেচনা করে দেখবে।

এক দফা সময় বাড়িয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। কিন্তু নির্মাতা কোম্পানি বা ঠিকাদার নিয়োগ দিতে না পারায় প্রকল্পটির মূল নির্মাণ কাজই শুরু করা যায়নি। সব মিলিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বড় ধরনের দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে পড়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।

এমইউএইচ/এএইচ/জেআইএম