দেশজুড়ে

মুক্তার হাতের চিকিৎসা শুরু

অবশেষে কিশোরী মুক্তার উন্নত চিকিৎসা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে তাকে ভর্তি করা হয়। এর আগে সোমবার রাত ১১টায় সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের তত্বাবধানে এ পরিবারটিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা পাঠানো হয়।

Advertisement

সাতক্ষীরা সদরের কামারবাইশা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহিম হোসেনের মেয়ে মুক্তা বিরল ও জটিল রোগে আক্রান্ত। তার ডান হাতটি সম্পূর্ণরূপে বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে বুক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ১২ বছর বয়সী মুক্তা দীর্ঘ ছয় বছর এ রোগে আক্রান্ত হলেও তার চিকিৎসাসেবার কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি পরিবার। বিভিন্ন সময় ডাক্তার কবিরাজ দেখালেও কোনো সুফল মেলেনি। এক সময় হাল ছেড়ে দিয়ে পরিবারটি মুক্তার মৃত্যুর প্রহর গুনছিলো।

এদিকে, মানবিক এ ঘটনাটি নিয়ে জাগো নিউজসব বেশি কিছু মিডিয়া সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদগুলো দেশ বিদেশে ব্যাপকভাবে সাড়া পড়ে যায়। তোলপাড় সৃষ্টি হয় গোটা মিডিয়া পাড়ায়। 

সোমবার জাগো নিউজের সংবাদটি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলামের নজরে এলে তিনি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আব্দুস সামাদ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেন। এরপর বিভাগীয় কমিশনার জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনকে চিকিৎসাসেবা প্রদান ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধক্রমে নির্দেশনা প্রদান করে। এর আগে রোববার লুকিয়ে রাখতে হয় মুক্তাকে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে জাগো নিউজ।

Advertisement

বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশনাক্রমে সিভিল সার্জন মো. তাওহিদুর রহমান সরেজমিন মুক্তার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সোমবার রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। হাসপাতালে চিকিৎসার খোঁজখবর নেন জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দীন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন মো. তাওহিদুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশনার পর জরুরীভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার রাতেই অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায় পাঠানো হয়। মঙ্গলবার সকালে বার্ন ইউনিটের ৬০৮ নম্বর রুমে তারা ভর্তি রয়েছে। সেখানে বার্ন ইউনিটের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. সমান্ত রাল সেনের তত্ত্বাবধায়নে রয়েছেন।

জাগো নিউজকে তিনি আরও বলেন, সার্বিক বিষয়গুলো জেলা প্রশাসক মহোদয় ও খুৃলনা ডিজি মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে। তাছাড়া জাগো নিউজের মাধ্যমে জেনেছি তার চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব নিয়েছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম এবং খুলনা ডিজি মহোদয় তিনিও বিষয়টিকে আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছেন ও সার্বিক বিষয়ের খোঁজখবর রাখছেন নিয়মিত।

এদিকে, ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য সেখানে অবস্থান করছেন মুক্তা বাবা ইব্রাহিম গাজী, মা আসমা খাতুন, চাচা আহসান হাবিব, মুক্তা মনির যমজ বোন হীরা মনি ও ছোট ভাই মিকাইল গাজী।

Advertisement

মুক্তার চাচা আহসান হাবিব জগো নিউজকে বলেন, ভর্তির পর এখানে রয়েছি। সকলেই খুব আন্তরিকতার সঙ্গে বিষয়গুলো দেখছেন। ডাক্তার চিকিৎসা শুরু করেছে। এদিকে, মুক্তা সকলের কাছে দোয়া চেয়ে জাগো নিউজকে বলেন, আমি যেন সুস্থ হয়ে আবার বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে পারি। স্কুলে যেতে পারি। সবার সঙ্গে মিশতে পারি আপনারা একটু দোয়া করেন আর চেষ্টা করেন। আমার এ কষ্ট আর সহ্য হয় না। খুব কষ্ট হয়। চলাফেরা করতে পারি না। বসতে পারি না। খুব কষ্ট হয়।এদিকে, মুক্তার চিকিৎসার  জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মুক্তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকলের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

আকরামুল ইসলাম/ এমএএস/এমএস