দুরন্ত শিশুটি হঠাৎ অসুখে পড়লে কেমন নিশ্চুপ হয়ে যায়। সারাদিন দুষ্টুমির জন্য বকা খাওয়া শিশুটিও যেন বিছানা ছেড়ে উঠতে পারে না। শিশুর অসুখে উদ্বিগ্ন হন মা-বাবা কিংবা অভিভাবক। এসময়ে জ্বর খুব সাধারণ একটি অসুখে পরিণত হয়েছে। নানা কারণেই জ্বর হতে পারে। জ্বর যে কারণেই হোক, জ্বরের চিকিৎসা করা প্রয়োজন। জ্বরের চিকিৎসার সঙ্গে আসল রোগ নির্ণয় করে তার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে। পাশাপাশি শিশুর সঠিক যত্ন নিতে হবে।
Advertisement
জ্বর হলে শিশুর গায়ে হালকা কাপড় রাখুন, জ্বর বেশি হলে শিশুর সব জামা-কাপড় খুলে দিন। জ্বর কমতে সহায়তার জন্য ঘরের জানালা-দরোজা খোলা রাখুন। ফ্যান হালকা করে ছেড়ে রাখুন বা হাতপাখা দিয়ে শিশুর সমস্ত শরীরে বাতাস করুন। শিশুর জ্বর কমে যাওয়ার পর সঙ্গে তার গায়ে হালকা-পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন। শীত বোধ হলে চাদর বা কাঁথা গায়ে দিয়ে দিতে পারেন।
একটি ভেজা কাপড় দিয়ে প্রথমে কপাল, মুখ পরে এক এক করে হাত, পা, শরীর, ভালো করে মুছে দিতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে মোছার পরপরই শুকনো কাপড় দিয়ে শরীর মুছে ফেলতে হবে। যেন শরীর বেশিক্ষণ ভিজে না থাকে। এমনি করে জ্বর না কমা পর্যন্ত বারবার সমস্ত শরীর মুছে দিতে হবে। একই সঙ্গে শিশুর মাথায় পানি দেয়া উচিত। কিছুক্ষণ মাথায় পানি ঢালার পর শুকনো কাপড় দিয়ে মাথা ও চুল ভালোভাবে মুছে দিতে হবে, যেন ভেজা চুলে বেশিক্ষণ থেকে শিশুর ঠাণ্ডা না লাগে।
জ্বরের সময় শিশুকে তার পছন্দমতো খাবার দেয়া উচিত। এমন খাবার দিতে হবে যা সহজে হজম হয়। আধা-তরল অথবা পুরোপুরিভাবে তরল খাবার দিলে সাধারণত সহজেই তা হজম হয়। অনেকের ধারণা জ্বরের সময় দুধ, কলা, ডাবের পানি, গ্লুকোজের পানি ইত্যাদি খাবার দেয়া ঠিক না। অনেকে আবার জ্বর হলে ভাত না দিয়ে রুটি খেতে দেন। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। জ্বর হলে ভাত খেতে কোনো নিষেধ নেই- তেমনি দুধ, কলা, ডাবের বা গ্লুকোজ পানি শিশুকে দেয়া যেতে পারে। তাকে একবারে অনেক পান না করিয়ে অল্প করে কিছুক্ষণ পরপর দেয়া উচিত।
Advertisement
শিশুর যতদিন জ্বর থাকে ততদিন তাকে বাইরে বেড়াতে না দিয়ে ঘরের মধ্যে রাখা সবচেয়ে ভালো। শিশুর তাপমাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর তাকে স্কুলে যেতে দিতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে জ্বর চলে যাওয়ার পরও সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরমার্শ মেনে চলাই শ্রেয়। চিকিৎসক জ্বরের ব্যাপারে যে সব পরামর্শ দেন তা মেনে চলা উচিত।
জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি হলে বিন্দুমাত্র দেরি না করে শিশুকে জরুরিভিত্তিতে নিকটবর্তী হাসপাতালে বা শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাবেন। বাসায় রেখে অযথা সময় নষ্ট করলে শিশুর সমূহ ক্ষতি হতে পারে। এমনকি শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
এইচএন/জেআইএম
Advertisement