বাংলাদেশের প্রধানতম কবিদের একজন কবি আল মাহমুদের ৮২তম জন্মদিন আজ। ১৯৩৬ সালের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌড়াইলের মোল্লা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। তিনি কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, আত্মজীবনীসহ বিবিধ বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন।
Advertisement
১৯৩০-এর কবিদের হাতে বাংলা কবিতায় যে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছিল, তার সাফল্যের ঝাণ্ডা আল মাহমুদ বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে অদ্যাবধি তুলনারহিত কৃতিত্বের সঙ্গে বহন করে চলেছেন। বাংলা কবিতাকে সমৃদ্ধ করেছেন নতুন আঙ্গিকে, চেতনায় ও বাক্ভঙ্গির সমন্বয়ে। বাংলা কবিতায় লোকজ ও গ্রামীণ শব্দের বুননশিল্পী কবি আল মাহমুদ নির্মাণ করেছেন এক মহিমান্বিত ঐশ্বর্য্যের মিনার।
১৮ বছর বয়স থেকে প্রকাশিত হতে থাকে তার কবিতা। সংবাদপত্রে লেখালেখির সূত্র ধরে তিনি ১৯৫৪ সালে ঢাকা আসেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত ও কবি সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল, কলকাতার নতুন সাহিত্য, চতুষ্কোণ, ময়ূখ, কৃত্তিবাস ও কবি বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত বিখ্যাত ‘কবিতা’ পত্রিকায় লেখালেখির সুবাদে ঢাকা-কলকাতার পাঠকদের কাছে সুপরিচিত হয়ে ওঠে তার নাম। কবি আবদুর রশীদ ওয়াসেকপুরী সম্পাদিত ও নাজমুল হক প্রকাশিত সাপ্তাহিক কাফেলায় লেখালেখি ও দৈনিক মিল্লাত পত্রিকায় সম্পাদনা সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি কাফেলায় সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত ‘লোক লোকান্তর’, ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত ‘কালের কলস’ ও ‘সোনালি কাবিন’ কাব্যগ্রন্থ তাকে প্রতিষ্ঠিত করে বাংলা কবিতার প্রথম সারির একজন কবি হিসেবে। কবি হিসেবে খ্যাতিমান হলেও বাংলা গল্পের এক আশ্চর্য সাহসী রূপকার আল মাহমুদ।
আল মাহমুদের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে সোনালী কাবিন, অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না, একচক্ষু হরিণ, মিথ্যাবাদী রাখাল, আমি দূরগামী, দ্বিতীয় ভাঙন, উড়ালকাব্য অন্যতম। কাবিলের বোন, উপমহাদেশ, ডাহুকি, 'আগুনের মেয়ে', 'চতুরঙ্গ' ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস।
Advertisement
এ পর্যন্ত অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, শিশু একাডেমি (অগ্রণী ব্যাংক) পুরস্কার, কলকাতার ভানুসিংহ সম্মাননা উল্লেখযোগ্য।
এআরএস/আরআইপি