জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণের সূচকে ১৫৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২০তম স্থানে রয়েছে।
Advertisement
জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক ২০১৭ সালের সর্বশেষ যে অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এসডিজি সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। আর প্রতিবেশী ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমার- এ পাঁচ দেশ রয়েছে বাংলাদেশের ওপর।
২০১৫ সালে জাতিসংঘ গৃহীত এসডিজিতে ২০৩০ সাল বা ১৫ বছরের মধ্যে মোট ১৭টি লক্ষ্য স্থির করা হয়। পরিবর্তনশীল বিশ্বে সমতা ও বৈষম্যহীন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
Advertisement
জাতিসংঘের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ১০টির অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আছে লাল তালিকায়। অর্থাৎ এসব লক্ষ্য পূরণ করতে বাংলাদেশকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর স্থির করা লক্ষ্যের অগ্রগতি বিচার করে তৈরি করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসডিজি সূচকে বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর ১০০- এর মধ্যে ৫৬ দশমিক ২০। আঞ্চলিক বিচারে বাংলাদেশের এ স্কোর পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার গড় স্কোরের থেকেও কম। পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার গড় স্কোর ৬৩ দশমিক ৩০।
এসডিজি অর্জনে সহায়তার অংশ হিসেবে চার বছরে বাংলাদেশকে ১২০ কোটি ডলার সহায়তা দিতে গত বছর একটি চুক্তি করে জাতিসংঘ। এসডিজির লক্ষ্যগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সব থেকে ভালো করেছে এসডিজি- ১ বা দারিদ্র্য দূরীকরণে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ৯৪ দশমকি ৪০।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। ৬৫ দশমিক ৯০ স্কোর নিয়ে শ্রীলঙ্কার অবস্থান ৮১তম। ৬৫ দশমিক ৫০ স্কোর নিয়ে ভুটান ৮৩তম, ৬১ দশমিক ৬০ স্কোর নিয়ে নেপাল ১০৫তম এবং ৫৮ দশমকি ১০ স্কোর নিয়ে ভারত ১১৬তম অবস্থানে রয়েছে।
Advertisement
বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে থাকা দুই দেশের মধ্যে ৫৫ দশমিক ৬০ স্কোর নিয়ে পাকিস্তান ১২২তম এবং ৪৬ দশমিক ৮০ স্কোর নিয়ে আফগানিস্তান ১৫০তম স্থানে রয়েছে। এছাড়া ৫৯ দশমিক ৫০ স্কোর নিয়ে প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ১১০তম অবস্থানে।
এসডিজির লক্ষ্য পূরণে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের স্কোর ৩৬ দশমিক ৭০। সবচেয়ে এগিয়ে থাকা সুইডেনের স্কোর ৮৫ দশমিক ৬০।
যেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ লাল তালিকায়
এসডিজি- ২ এ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ক্ষুধামুক্ত, এসডিজি- ৩ এ সবার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত জীবন নিশ্চিত করা, এসডিজি- ৪ এ ন্যায্যতাভিত্তিক ও মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ, এসডিজি- ৭ এ সহজলভ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির প্রাপ্যতা, এসডিজি- ৮ এ সবার মানসম্মত কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, এসডিজি- ৯ এ অবকাঠামো, শিল্পায়ন ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহার, এসডিজি- ১১ এ টেকসই নগর উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা, এসডিজি- ১৪ এ সমুদ্রসম্পদের টেকসই উন্নয়ন ও ব্যবহার, এসডিজি- ১৬ এ শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতি এবং এসডিজি- ১৭ তে এসডিজি বাস্তবায়নে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব সৃষ্টি।
এর মধ্যে এসডিজি- ৯ এবং এসডিজি- ১১ তে বাংলাদেশের স্কোর সবচেয়ে কম, ১০০- এর মধ্যে এসডিজি- ৯ তে বাংলাদেশের স্কোর ১২ দশমিক ৫০ এবং এসডিজি- ১১ তে স্কোর ১৪।
এমএএস/এমএআর/পিআর