উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণে বগুড়ায় যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার ৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
Advertisement
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন দেখা দেয়ায় বয়রাকান্দি, ধলিরকান্দি ও বড়ইকান্দি গ্রামের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। যমুনার ভাঙনে ইতোমধ্যে বয়রাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি এবতেদায়ী মাদরাসা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
সোমবারও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানিয়েছে, নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ৭টি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের ১০ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত উপজেলার ৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় উপজেলার সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমির পাট, আউশ, বীজতলা ও শাকসবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
Advertisement
বন্যার কারণে সারিয়াকান্দিতে যমুনা তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের বয়রাকান্দি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ভাঙন দেখা দেওয়ায় বয়রাকান্দি, ধলিরকান্দি ও বড়ইকান্দি গ্রামের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, বন্যা আসার আগে থেকে ২৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে রৌহাদহ থেকে কর্ণিবাড়ি পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার যমুনার তীর সংরক্ষণ কাজ চলমান রয়েছে। ভাঙনের কারণে এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমীন জানান, বয়রাকান্দি পয়েন্টে নদী তীর জেগে উঠলে জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করা হবে। এখন সেখানে পানি প্রবাহিত হওয়ায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম জানান, বন্যা কবলিত এক হাজার পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে । বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে।
Advertisement
এদিকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সাহেববাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বাঁধটির প্রায় দেড় থেকে দুইশ মিটার বাঙালি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একইসঙ্গে বাঁধের ওই স্থানে আশ্রয় নেয়া বেশ কয়েকটি বসতবাড়িও নদীগর্ভে চলে গেছে। বাঁধটি পুরোপুরি ভেঙে গেলে বগুড়ার শেরপুর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলার হাজারো একর ফসলি জমিসহ কয়েক’শ বসতবাড়ি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, বাঁধে ধস ও বসতবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লিমন বাসার/এমএএস/পিআর