কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডীতে পাওনা টাকার জের ধরে সালিশে ডেকে উপর্যুপরী ছুরিকাঘাতে পাওনাদার যুবককে খুন করেছে ঋণী যুবক। রোববার দুপুর ১২টার দিকে চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের নতুন মহাল এলাকায় ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রাত পৌনে ১১টায় তার মৃত্যু হয়। নতুন মহাল এলাকার গ্রাম পুলিশ সফর আলী তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহতের নাম ছৈয়দ করিম (৩৬)। তিনি নতুন মহাল এলাকার ছৈয়দ আহমদের ছেলে ও সদ্য প্রবাস ফেরত। ঘটনার পরপরই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ঘাতক ওসমাস গণি (৩৫)। তিনি স্থানীয় কালুফকিরপাড়া মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার ছেলে। তিনিও সদ্য প্রবাস থেকে ফিরেছেন। চৌফলদন্ডী ইউপির চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সৌদি আরবে একসঙ্গে প্রবাসে ছিলেন ছৈয়দ করিম ও ওসমান গণি। সেসময় ওসমানের সঙ্গে কাজ করতেন ছৈয়দ করিম। কাজের মাধ্যমে ওসমানের কাছ থেকে ছৈয়দ করিম প্রায় তিন হাজার সৌদি রিয়াল পাওনা থাকে। সেখানে টাকা দেয়নি ওসমান। এরই মাঝে ধরা পড়ে দেশে চলে আসে ছৈয়দ করিম। সম্প্রতি ওসমান দেশে আসলে তার পাওনা নিয়ে তার কাছে (ইউপি সদস্য ফরিদুল আলমের) ছৈয়দ করিম সালিশ দেয়। ধার্যমতো রোববার ওসমানের বাড়ির পাশে বৈঠক স্থলে গিয়ে বিচারকের অনুপস্থিতিতে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে দুজন। এর এক পর্যায়ে ছৈয়দ করিমকে হঠাৎ উপর্যপুরী ছুরিকাঘাত করে ওসমান। এতে তিনি মাটিতে লুটে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার ডিজিটাল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হলে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছার অল্পক্ষণ পর রাত পৌনে ১১টার দিকে ছৈয়দ করিম মারা যান। ঘটনা স্থলে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মহিউদ্দিন জানান, খবর নিয়ে জেনেছি বাবা মুক্তিযোদ্ধা হলেও ছেলে অপরাধপ্রবণ। এজন্য পরিবারের কারও সঙ্গে ওসমানের সম্পর্ক ভালো নেই। বছর আগে থেকে পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়ে স্ত্রীর বাবার বাড়ি পার্শবর্তী খুরুশকুল ইউনিয়নে বসবাস করত ওসমান। প্রবাসেও তার অপরাধ কর্মের জন্য স্থানীয় ও আত্মীয় প্রবাসীদের সঙ্গে তার দন্দ্ব তৈরি হয়। ছৈয়দ করিমের মতো একাধিক ব্যক্তি তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ পাওনা রয়েছে। ঘটনার পর সবাই আহতকে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ঘাতক ওসমান নিজের মতো করে সরে পড়ে। ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. খায়রুজ্জামান জানান, ঘটনার পর পরই অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশ যাওয়ার আগে ওসমান নদী পার হয়ে মহেশখালী পালিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তাকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।সায়ীদ আলমগীর/জেডএ
Advertisement