দেশজুড়ে

নদী ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড

ফেনী ছড়া নদীর করাল গ্রাস যেন থামছেই না। প্রতি বছরই ফেনী ছড়া নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে মাটিরাঙ্গার বিস্তীর্ণ জনপদ। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। ফলে কমে যাচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড। আর এতে করে ছোট হয়ে আসছে সীমান্ত। এবারের টানা বর্ষণেও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না। টানা বর্ষণে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ফেনী ছড়া নদী তীরের বাংলাদেশের প্রায় এক কিলোমিটার ভূমি।

Advertisement

পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন ৪০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধীন আমতলী বিওপি এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানির তোড়ে ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একইভাবে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে দেওয়ানবাজার ও অযোধ্যা সীমান্ত এলাকায়।

দেওয়ানবাজার এলাকায় ৪০ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের পলাশপুর জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. খালিদ আহমেদ পিএসসির উদ্যোগে ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে ভাঙনরোধের চেষ্টা করলেও টানা ভারী বর্ষণে তা কোনো কাজে আসছে না।

স্থানীয় কৃষক মো. শাহ এমরান ও মো. মনির হোসেন বলেন, ফেনী ছড়া নদীর ভাঙনের ফলে দিন দিন বাংলাদেশের ভূখণ্ড নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। এতে করে তাদের ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। বিলীন হচ্ছে তাদের অনেক কষ্টের ফসল। নদীর ভাঙনরোধে সরকারের জরুরি উদ্যোগ দাবি করেন তারা।

Advertisement

আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুল গণি বলেন, অব্যাহত ভাঙনের বিষয়টি পলাশপুর জোন কমান্ডার ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। বাংলাদেশের ভূখণ্ড রক্ষায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্লক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।

নদী ভাঙনরোধে সরকারি উদ্যোগ দাবি করেন বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে অযোধ্যা সীমান্তে ফেনী ছড়া নদীর ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিলীন হয়ে গেছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বি.এম মশিউর রহমান বলেন, পলাশপুর বিজিবির জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. খালিদ আহমেদ পিএসসির মাধ্যমে ভাঙণের খবর পেয়ে আমি ভাঙন কবলিত এলাকাসমূহ পরিদর্শন করে ছবিসহ জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় ফেনী ছড়া নদীর ভাঙনরোধে প্রকল্প প্রহণের সহায়তা চেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন। আশা করছি দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের ভূখন্ড রক্ষার স্বার্থে জরুরী উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইতোমধ্যেই অনেক সীমান্ত পিলার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে উল্লেখ করে পলাশপুর বিজিবির জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. খালিদ আহমেদ পিএসসি বলেন, অব্যাহতভাবে ফেনী ছড়া নদীর ভাঙনের বিষয়টি বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

Advertisement

ভাঙতে ভাঙতে নদী বাংলাদেশের অনেক ভেতরে চলে এসেছে দাবি করে তিনি বলেন, অবিলম্বে ভাঙনরোধ করা না গেলে স্থানীয় কৃষকদের ফসলি জমি নদীতে হারিয়ে যাবে।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এমএএস/জেআইএম