দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ৬৫ বছরে পর্দাপণ করল আজ বৃহস্পতিবার। ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই ১৬১ জন শিক্ষর্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার।
Advertisement
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনের সামনে অতিথিবৃন্দের উপস্থিতিতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন এবং পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলের পতাকাও উত্তোলন করা হয়। পরে সিনেট ভবনের সামনে বৃক্ষ রোপণ করা হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট, আবাসিক হলসমূহ আলাদা আলাদা ব্যানার নিয়ে অংশগ্রহণ করে।
শোভাযাত্রা শেষে বেলা ১১টায় সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাবির সাবেক উপাচার্য এবং যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক এম সাইদুর রহমান খান।
অধ্যাপক এম সাইদুর রহমান খান বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নির্ভর করে তার গবেষণার ওপর। আমরা যেটা গবেষণা করবো সেটা যেন মানুষের জন্য, সমাজের উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। গবেষণা যেন গবেষণার জন্যই না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের শুধু শিক্ষা ও গবেষণা দিলেই হবে না। তাদেরকে সঠিকভাবে তৈরি করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম এবং ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রকীব আহমদ।
Advertisement
এদিকে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা, প্রধান ফটক ও ভবনগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সেখানে শোভা পাচ্ছে রঙ-বেরঙের আলোকসজ্জ্বা।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৩ সালের ৩১শে মার্চ প্রাদেশিক পরিষদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হয়। একই বছরের ৬ জুলাই ড. ইৎরাত হোসেন জুবেরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি করে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
সেই সময় পদ্মাপাড়ের বড় কুঠি ও রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬১ সালে বড় কুঠি থেকে নয়নাভিরাম মতিহারের এ সবুজ চত্বর আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। রাজশাহী শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে অবস্থিত এ ক্যাম্পাসটি ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টর জমিতে স্থাপিত।
শুরুতে দর্শন, ইতিহাস, বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, গণিত ও আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি অনুষদের অধীনে ৫৭টি বিভাগ রয়েছে। তাছাড়া উচ্চতর গবেষণার জন্য রয়েছে ৫টি ইনস্টিটিউট। শিক্ষক রয়েছে প্রায় সাড়ে ১২শ এবং শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার।
রাশেদ রিন্টু/আরএআর/আরআইপি