ফিচার

বই পড়ার যতো সুফল

সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘বই কেনা’ প্রবন্ধে বলেছেন, ‘বাঙালির বই কেনার প্রতি বৈরাগ্য দেখে মনে হয়, সে যেন গল্পটা জানে, আর মরার ভয়ে বই কেনা, বই পড়া ছেড়ে দিয়েছে।’ এছাড়া প্রমথ চৌধুরী তাঁর ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বলেছেন, ‘ লাইব্রেরি হাসপাতালের চাইতে কম উপকারী নয়, তার কারণ আমাদের শিক্ষার বর্তমান অবস্থায় লাইব্রেরি হচ্ছে একরকম মনের হাসপাতাল।’

Advertisement

বই কেনা বা বই পড়া নিয়ে অনেক জ্ঞানগর্ভ আলোচনা আছে। অনেক সাহিত্যিক বই পড়তে উৎসাহিত করার জন্য প্রবন্ধ লিখেছেন। তারা জ্ঞান-বুদ্ধি বৃদ্ধির কথা বলেছেন। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে ভিন্ন কথা। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, শরীর সুস্থ রাখতেও বই পড়ার অভ্যাস দারুণভাবে সাহায্য করে।

যদিও কথাটা বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হতে পারে। তবে এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, বই এবং শরীরের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ফলে বই পড়লে অবশ্যই শারীরিক সুফল পাবেন। আসুন জেনে নেই সেই সফলতা সম্পর্কে-

মানসিক চাপবর্তমান সময়ে যেসব রোগে নতুন প্রজন্ম বেশি মাত্রায় ভুগছে, তার বেশিরভাগের সঙ্গেই মানসিক চাপের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। বই পড়ার অভ্যাস এমন সমস্যা কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে। কারণ বই পড়ার সময় মন খুব শান্ত থাকে। ফলে মানসিক চাপ কমতে শুরু করে। সেইসঙ্গে হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ও হ্রাস পেতে থাকে।

Advertisement

মনোযোগ বৃদ্ধি কোন কাজে উন্নতি করতে গেলে মনোযোগ সহকারে সেই কাজটি করা একান্ত আবশ্যক। এক্ষেত্রে আপনাকে কেবল বই-ই সাহায্য করতে পারে। কারণ প্রতিদিন বই পড়লে ব্রেনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে উন্নতি ঘটে মনোযোগ ক্ষমতারও। যারা অ্যাটেনশন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রমে ভুগছেন; তারা এখনই বই পড়া শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই পরিস্থিতি একেবারে আমূল পাল্টে যাবে।

মস্তিষ্কের উন্নতিবই পড়ার সময় মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা হাজারো নিউরন বেশি বেশি করে কাজ করতে শুরু করে। ফলে সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমনটা হলে একদিকে যেমন বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, তেমনি নানা ধরনের ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।

মানসিক শান্তি সারাদিন কাজের পর ৬০-৭০ শতাংশ মানুষই মন-মেজাজ চাঙা করতে টেলিভিশন দেখেন। তাতে কি সত্যিই মন শান্ত হয়? বিজ্ঞানের ভাষ্য মতে, মন এবং মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করতে টেলিভেশনের পরিবর্তে বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন। কারণ বই পড়লে শরীরের উপকার হয়, টিভি দেখলে নয়।

এসইউ/পিআর

Advertisement