সরকার বিচার বিভাগকে করায়াত্ত করার যে দুরভিসন্ধি করেছিল, আজ সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হলো। ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণায় সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
Advertisement
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এ রায়কে জনগণের বিজয় হিসেবেও আখ্যায়িত করেছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে বিচারপতিদের অপসারণ করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে নেয়া হয়েছিল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সেটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
Advertisement
রিজভী বলেন, বর্তমান জাতীয় সংসদের যে ‘কম্পোজিশন’ তাতে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত থাকলে সেখানে চরম দলীয় কর্তৃত্বের প্রতিফলন ঘটতো এবং নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচার ক্ষুণ্ন হতো। বিচারকদের নানাভাবে প্রভাবিত করতে তারা চাপ প্রয়োগের সুযোগ পেতো। সুপ্রিম কোর্টের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের আদালতের ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপের নিশ্চিত সম্ভাবনা দূর হলো।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের ফলে জনগণের মনে ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তার আশ্বাস আরও গভীরভাবে প্রোথিত হলো।
এর আগে এ রায়ে হতাশা প্রকাশ করলেও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইনি কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এ রায়ের মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়েছে বিচার বিভাগ স্বাধীন। বিচার বিভাগ স্বাধীন বলেই এ রায় দিতে পেরেছে।
তার আগে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের দায়ের করা আপিল সর্বসম্মতিক্রমে খারিজ করে দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
Advertisement
আদালতের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১ ঘন্টা ২৬ মিনিট পরে সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে এই রায় ঘোষণা করেন।
এমএম/এনএফ/জেআইএম