রাজধানী এবং এর আশপাশের নদী-খালগুলোর দখল দূষণ বন্ধ হচ্ছে না। দখল দূষণের বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে কিছু অভিযান এবং সামান্য জেল-জরিমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে সবকিছু। অথচ পরিবেশ সচেতনতার এই যুগে নদী-খালের দখল দূষণ বন্ধ এবং যথাযথভাবে তা রক্ষা করা সময়ের দাবি।
Advertisement
ডাইং বর্জ্য তুরাগ নদীতে ফেলে দূষণের অভিযোগে এর আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু দূষণ বন্ধ হয়নি। এসব বর্জ্যর মধ্যে রয়েছে ক্ষতিকর প্লাস্টিক, পলিথিন, রাসায়নিক সামগ্রী, জৈব, অজৈব ও গৃহস্থালি বর্জ্য। শুধু তাই নয়, সাভার অঞ্চলের শিল্প-কারখানার রাসায়নিক বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে নদী-খালে। গাজীপুরের অবস্থাও একই। সেখানকার জমিজমা পর্যন্ত চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে শিল্প বর্জ্যর দূষণে। এ অবস্থায় এতদঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগব্যাধি। শিল্প-কারখানা এবং প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মেনে চলে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নদী-খাল দখল দূষণ দেশে নতুন কোনো ঘটনা নয়। ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতিতে যে যেভাবে পারে এই দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সব শেয়ালের এক রা। প্রশাসনও এসব ক্ষেত্রে অনেক সময় নির্বিকার ভূমিকা পালন করে। অনেক ক্ষেত্রে দখলদাররা এতটা প্রভাবশালী থাকে যে তারা, আইন প্রশাসন সবকিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়। অথচ নদ-নদী টিকে থাকার সঙ্গে বলা যায় বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক অস্তিত্বের সম্পর্ক জড়িত। কাজেই যে কোনো মূল্যে নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
ইতোপূর্বে ঢাকার চারপাশের নদী বাঁচানোর জন্য হাইকোর্টকে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। কিন্তু দখল বন্ধ হচ্ছে না। একদিকে উচ্ছেদ অভিযান চলে অন্যদিকে নতুন করে দখল হয়। এই সাপলুডু খেলায় শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় দখলকারীরাই। অথচ নদী দখল বন্ধ করতে না পারলে এর পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। পরিবেশ সচেতনতার এ যুগে নদীর অপমৃত্যু হবে আর সকলে চেয়ে চেয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। দখলকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া নদী দখল বন্ধ করা যাবে না। নদী দখলে একটি দুষ্টচক্র অত্যন্ত ক্রিয়াশীল। এ চক্র ভাঙতে হবে। প্রশাসনের কোন গাফিলতি থাকলে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা নদীমাতৃক বাংলাদেশকে তার আপন মহিমায় দেখতে চাই।
Advertisement
এইচআর/পিআর