মূলধারার নারী আন্দোলনের সঙ্গে আদিবাসী নারীর অধিকারের বিষয়টি সম্পৃক্ত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় আদিবাসী নারী সম্মেলন ও কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তারা।শনিবার দুই দিনব্যাপী জাতীয় আদিবাসী নারী সম্মেলন ও কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে বক্তারা এ কথা বলেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুর সিবিসিবি সেন্টারে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক ও কাপেং ফাউন্ডেশন `আদিবাসী নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্য ও সংহতি জোরদার করুন` -এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ওই সম্মেলনের আয়োজন করেন।বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম বলেন, আদিবাসী নারীদের সম-অধিকারকে বাদ দিয়ে মূলধারার নারী আন্দোলন শক্তিশালী হতে পারবে না, নারীর সার্বিক মানবাধিকার সংরক্ষণ করাও সম্ভব হবে না। মূলধারার নারী আন্দোলনের সঙ্গে আদিবাসী নারীর অধিকারের বিষয়টি সম্পৃক্ত করতে পৃথক কমিশন গঠন করেছে পরিষদ।বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, আদিবাসী নারীরা পাঁচ স্তরে বৈষম্যের শিকার হয়। আদিবাসী হিসেবে, নারী হিসেবে, পাহাড় বা বনাঞ্চলে বসবাসের কারণে ও দরিদ্র হিসেবে। এ ছাড়া নিজস্ব এলাকা ছেড়ে যখন কাজের জন্য শহরে আসে তখন। আদিবাসী নারীদের অধিকার রক্ষায় মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। আদিবাসী নারীদের মানুষ হিসেবে সত্যিকার অর্থে মর্যাদা দিতে হবে।সম্মেলনে জানানো হয়, দেশে ৫৪টির বেশি জাতিগোষ্ঠীর প্রায় ৩০ লাখ আদিবাসী বাস করছে, যার অর্ধেক হচ্ছেন নারী। নারীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সম্মেলনে জানানো হয়, গত চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতল অঞ্চলে কমপক্ষে ১৮ আদিবাসী নারী যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজন ধর্ষণের পর হত্যা, নয়জনকে ধর্ষণ, সাতজনকে ধর্ষণের চেষ্টা এবং একজনকে অপহরণ করা হয়। এর মধ্যে ১৬টি বাঙালিরা এবং দুটি ঘটনা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।নেটওয়ার্কের আহবায়ক মিনু মারিয়া ম্রংয়ের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী পর্বে কাপেং ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মঙ্গল কুমার চাকমা, অক্সফার্মের প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম বি আখতার, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের যুগ্ম আহবায়ক ফ্লোরা বাবলি তালাং প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Advertisement