যুবরাজ চার্লসের প্রাক্তন প্রেমিকা তথা বর্তমান স্ত্রী ক্যামিলা পার্কারকে হত্যার করার হুমকি দিয়েছিলেন তার প্রাক্তন স্ত্রী প্রিন্সেস ডায়না। মাঝরাতে ফোন আসত ক্যামিলা পার্কারের কাছে। বর্তমান স্ত্রী ক্যামিলা তখন যুবরাজ চার্লসের প্রেমিকা। ফোনের ওপারে নারীকণ্ঠ নিজের নাম বলত না।
Advertisement
হিমশীতল গলাটা শুধু ফিসফিস করে বলত, ‘আমি তোমায় খুন করতে লোক পাঠিয়েছি। দেখ, তোমার বাগানেই রয়েছে। জানলা দিয়ে দেখ। কি? দেখতে পেলে?’ এইটুকু বলেই কেটে যেত ফোনের লাইন।
রয়্যাল ফ্যামিলির জীবনীকার পেনি জুনোর সাম্প্রতিক সময়ে তার একটি বইতে ‘১৯৭১ সালে চার্লস ও ক্যামিলার দেখা হয়। লুসিয়া স্যান্টা ক্রুজ নামে এক বন্ধুর মাধ্যমে তাদের পরিচয়। খুব তাড়াতাড়িই তারা ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথার সঙ্গে মাঝে মধ্যেই তারা দেখা করতেন। দীর্ঘদিন চিঠি চালাচালিও হয়েছিল।’
মধ্যরাতে ফোনের ওপারের সেই রহস্যময়ী নাকি আর কেউ নন, স্বয়ং ডায়নাই ছিলেন। তখন যিনি চার্লসের স্ত্রী। ‘দ্য ডাচেস: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ বইয়ে এই রকমই বিস্ফোরক দাবি করেছেন জীবনীকার পেনি জুনর। আগামী মাসে ক্যামিলার ৭০ বছরের জন্মদিনে প্রকাশিত হবে সেই বই।
Advertisement
বইয়ে পেনি দাবি করেছেন, ডায়নার সঙ্গে বিয়ের আগে ক্যামিলার সঙ্গে বছর দুয়েক সম্পর্ক ছিল চার্লসের। তা সত্ত্বেও ডায়ানাকে বিয়ে করেন চার্লস। ক্যামিলাও বিয়ে করেন তার প্রাক্তন প্রেমিককে। বিয়ের আগে ক্যামিলার সঙ্গে সদ্ভাব ছিল ডায়নার। যদিও বিয়ের পর দূরত্ব বাড়ে দু’জনের। ডায়না-চার্লস উপস্থিত থাকতে পারেন এমন অনুষ্ঠানগুলি এড়িয়েই চলতেন ক্যামিলা। অন্যদিকে, স্বামীর আচার-আচারণে সন্দেহ বাড়তে থাকে ডায়নারও। সেই সময় বেশ কয়েকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
নব্বইয়ের দশক থেকেই মানসিক অসুস্থতা বাড়তে থাকে ডায়নার। সব সময় ভয় পেতেন ঘনিষ্ঠ সবাই তার ক্ষতি করার চক্রান্ত করছে। এই সন্দেহ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এমনকী সেই সময় ব্যক্তিগত সচিব প্যাট্রিক জেপসনের উপর থেকেও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। প্যাট্রিককে তিনি এক বার লিখেছিলেন, ‘আমি জানি তুমি আমার সঙ্গে বেইমানি করছ।’
১৯৯৪ সালে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে চার্লস প্রথম ক্যামিলার সঙ্গে তাঁর শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে নেন। এর পরেই ক্যামিলার সঙ্গে বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে যান তাঁর স্বামী অ্যান্ড্রু পার্কার।
এক বছর বাদে একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দেন ডায়নাও। জানান, জেমস হিউইটের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা। ডায়নাকে ঘোড়া চালানো শেখাতেন তিনি। সেখানে চার্লসের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতির ইঙ্গিতও দেন ডায়না।
Advertisement
১৯৯৬ সালে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয় ডায়না ও চার্লসের। পরের বছর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ডায়নার। প্রাক্তন স্ত্রীর মৃত্যুর পর অবশ্য প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যামিলার কাছেই ফিরে যান প্রিন্স চার্লস। প্রায় ন’বছর পর ক্যামিলা পার্কারকে বিয়ে করেন প্রিন্স অব ওয়েলস।
টিটিএন/এমএস