ছুটিতে কিংবা অখণ্ড অবসরে ঘুরে আসুন দেশের একমাত্র চোখজুড়ানো জলাবন রাতারগুল। অবসর সময় কাটাতে প্রতিদিন এখানে ছুটে আসে ভ্রমণ পিপাসুরা।
Advertisement
এটি জলাবন হিসেবে পরিচিত হলেও শীতে পানি থাকে না এ বনে। দেশের একমাত্র ‘সোয়াম্প ফরেস্ট’ বা জলাবন রাতারগুল। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রায় ৩৩৮ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই বনকে ১৯৫২ সালে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করে বন বিভাগ। শীতে এ বনের পানি শুকিয়ে গেলেও বছরের বাকি সময় জলমগ্ন থাকে পুরো বনটি।
দেশের অন্যতম অভয়ারণ্য এটি। রাতারগুল মূলত বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য। এ বনের প্রাণীদের বড় একটি অংশ সরীসৃপ। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ দেখা যায়।
সোনা রঙের ব্যাঙ রাতারগুলের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়াও রাতারগুলে রয়েছে নানা প্রজাতির ব্যাঙ।
Advertisement
গিরগিটির দেখা পাওয়া যাবে রাতারগুলের জলাবনে।
রাতারগুলে বানর দেখা যাবে। রাতারগুল জলাবনে বসবাস করে বেশ কিছু বানর। জলে ডোবা এ বনের ডালে ডালে বিচরণ তাদের। তবে এক শ্রেণির পর্যটকদের উৎপাতের কারণে এ প্রাণীটি দিন দিন কমে যাচ্ছে।
রাতারগুল বনে জলসহিষ্ণু চার প্রজাতির গাছ বেশি দেখা যায়। এগুলো হলো হিজল, বরুণ, করচ আর মুর্তা। তিন ধরনের গাছ জলের উপরে থাকলেও বর্ষা মৌসুমে মুর্তা গাছ জলে ডুবে থাকে। এই মুর্তা দিয়েই তৈরি হয় সিলেটের বিখ্যাত শীতল পাটি।
নজড়কাড়া কোষা নৌকা। প্রতিদিন কয়েকশ পর্যটক রাতারগুল জলাবনে যান। এ বনে ঘুরে বেড়ানোর জন্য একমাত্র বাহন স্থানীয় কোষা নৌকা। একেকটি নৌকায় দুই থেকে দশজন পর্যন্ত বেড়াতে দেখা যায়। দেড় শতাধিক মানুষ এ বনে পর্যটকবাহী নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
Advertisement
রাতারগুলে ছুটির দিনে ভিড় বাড়ে। সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটির দিনগুলোতে রাতারগুল জলাবনে পর্যটকের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
রাতারগুল জলাবনের গড় গভীরতা প্রায় ১৫ ফুট। তবে এ বনের কোথাও কোথাও গভীরতা ৩৫ ফুটেরও বেশি৷ এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভ্রমণকালীন লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করতে দেখা যায় না। পর্যটকদের জন্য সরকারি কোনো সুব্যবস্থাও নেই এখানে।
রাতারগুল জলাবনে পর্যটকদের ফেলে যাওয়া প্লাস্টিকের বোতল বনের পরিবেশের ক্ষতি করে। অপচনশীল এসব বর্জ্যের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে, যা বনের পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
রাতারগুল বনের মাঝে সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হচ্ছে কংক্রিটের তৈরি বিশাল পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। এখানে রিসোর্ট হিসেবে বড় বড় ইটের তৈরি স্থাপনা তৈরিরও উদ্যোগ নিয়েছিল বন বিভাগ। তবে পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের মুখে রিসোর্টগুলো তৈরি না করলেও পর্যবেক্ষণ টাওয়ারটি তৈরি করা হয়েছে।
এএ/জেআইএম