দেশজুড়ে

পাহাড়ধসের ধাক্কা পর্যটনে, ভিড় নেই পর্যটকের

সবুজের চাদরে ঢাকা প্রকৃতিকে দেখার আর সারি সারি পাহাড়ের ওপর দিয়ে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসেন পার্বত্য জেলা বান্দরবানে।

Advertisement

পাহাড়ের সঙ্গে মেঘের লুকোচুরি খেলা এবং মেঘ উড়ে যাবার দৃশ্য দেখার জন্য পর্যটকরা ভিড় করেন নীলাচল ও নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রে। শৈলপ্রপাত আর মেঘলার লেকের জলে গা ভিজিয়ে অনেকে ঝেড়ে ফেলেন নাগরিক ক্লান্তি। আর এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি ভিড় জমান ঈদের ছুটিতে।

তবে তিন পার্বত্য জেলায় টানা বর্ষণে সরকারি হিসেবে পাহাড়ধসে ১২১ জনের প্রাণহানির ঘটনায় পাল্টে দিয়েছে পার্বত্য জেলার পর্যটনের চিত্র। রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানি আর সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার ঘটনার প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে। ভাটা পড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ে।

বান্দরবানের মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কাউন্টারের ব্যবস্থাপক শাহাজাহান বলেন, গত বছরের ঈদে প্রচুর পর্যটকের ভিড় ছিল। প্রতিদিন প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টিকেট বিক্রি হত। কিন্তু এ বছর দ্বিতীয় দিনে প্রায় এক হাজার টিকেট বিক্রি হয়েছে।

Advertisement

পর্যটন কেন্দ্র মেঘলায় আশানুরুপ পর্যটক না হওয়ায়, টানা বর্ষণের পাহাড়ধসের ঘটনাকেই দায়ি করছেন তিনি।

এদিকে বান্দরবানে হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত বছর হোটেল-মোটেলগুলোতে ধারণক্ষমতার বাইরে পর্যটক সমাগম হত। কিন্তু এ বছর হোটেল-মোটেলগুলো তার এক ভাগও দেখা মেলেনি।

তিনি আরও বলেন, পাহাড়ধসে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ায় পর্যটকদের মাঝে আতঙ্ক কাজ করেছে। এই দুই দিনে বান্দরবানে প্রায় ব্যবসায়িক ক্ষতি ৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে পাহাড়ধসের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার ঘটনা দাগ কাটতে পারেনি অনেককে। তাই নীলাচলে দাঁড়িয়ে মেঘের ভেলা দেখার জন্য পর্যটকরা ছুটে এসেছেন বান্দরবানে। মুগ্ধ হয়েছেন এখানের প্রাণ-প্রকৃতি দেখে। কেউবা তার শখের মোবাইল ফোনটি হাতে নিয়ে তুলছেন স্বজনদের ছবি। পাহাড়ের মনভোলানো দৃশ্যে নিজেকে ছবির ফ্রেমে বন্দি করছেন কেউ কেউ।

Advertisement

ঢাকার ফার্মগেট থেকে নীলাচলে ঘুরতে আসা পর্যটক মানিক বলেন, আগে এখানে কখনও আসেনি। বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে।

সবুজ পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পাহাড়ের হিম শীতল ঝর্ণার পানিতে গা ভেজানোর জন্য অনেকে ছুটে এসেছেন দুর-দূরান্ত থেকে।

ঢাকার ওলিভারস কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ইরিন রোজারিও বলেন, চারিদিকে সবুজ পাহাড়, মেঘ এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে দেশে আছে এখানে না আসলে কখনও জানতাম না তাই সবার উচিত আগে নিজের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে দেখা তারপর বাইরের দেশে যাওয়া।

বান্দরবানে পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, পর্যটকদের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। এখানের পর্যটনকেন্দ্রে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে পারবেন পর্যটকরা।

জেএইচ/এমএস