প্রবাস

মালয়েশিয়া প্রবাসী সাঈদের পরিবারে ঈদের আনন্দ নেই

মালয়েশিয়ায় ভাগ্য ফেরাতে গিয়ে কফিনে দেশে ফিরছেন নরসিংদীর আবু সাঈদ (৩৭)। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন নিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। নরসিংদীর রায়পুরা থানার বাহের চর গ্রামের মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে সাঈদ। পরিবারের অভাব দূর করতে ও মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে ২০১৪ সালে ট্যুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়া যান। মালয়েশিয়ায় যাত্রা শুরুর পরপরই খুলতে থাকে চোখ। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। এরই মধ্যে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। অবৈধ হয়ে পড়েন তিনি। একদিকে অবৈধ অন্যদিকে কাজ। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া মালয়েশিয়ায় কাজ পাওয়া খুবই কঠিন। কোনো উপায়ন্তর না দেখে পুলিশের ভয়ে শহর ছেড়ে কাজের আশায় চলে যান পাহাং ডিস্ট্রিক্টের ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে।

Advertisement

সেখানে গিয়ে একই এলাকার হোসাইন নামের একজনের ভিসা ফটোকপি করে হোসেইন নামেই চীনা মালয়েশিয়ান নাগরিক অনকাই হংয়ের কোম্পানিতে কৃষি কাজে নিয়োগ পান। অবৈধ হওয়ায় প্রাথমিক বেতন ধার্য করা হয় এক হাজার রিঙ্গিত। এভাবেই চলতে থাকে তিনটি বছর। এর মাঝে শুরু হয় মালয়েশিয়া সরকার ঘোষিত অবৈধদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া। সে অনুযায়ী অনকাই হংয়ের কোম্পানির নামেই বৈধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

সাঈদের ইচ্ছে ছিল রি-হিয়ারিংয়ের মাধ্যমে বৈধ হয়ে দেশে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন। কিন্তু সে আশা আর তার পূরণ হলো না। পরিবারের সবাইকে কাঁদিয়ে সাঈদ চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

গত ২১ জুন সকালে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাৎক্ষণিক তাকে ইপু হাসপাতালে ভর্তি করেন মালিক অনকাই হং। ২২ জুন সকাল ৮ টায় মারা যান তিনি। সাঈদের মরদেহ দেশে পাঠাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তারই ভাতিজা রমজান মিয়া ও তার দুই বন্ধু কবির ও বাবুল। ঈদের ছুটি থাকায় মরদেহ দেশে পাঠাতে দেরি হচ্ছে বলে জানান তার ভাতিজা রমজান মিয়া। তবে আগামী ২৯ জুন বৃহস্পতিবার সাঈদের মরদেহ দেশে আসবে বলে জানান রমজান। নিথর দেহটি একনজর দেখতে অপেক্ষায় আছেন সাঈদের বৃদ্ধা মা ফুলমতি বেগম এবং ১০ বছরের মেয়ে কলি ও ৫ বছর বয়সী ছেলে মেহেদী হাসান।

Advertisement

এ দিকে তার মরদেহ দেশে পাঠাতে কী কী করণীয় সে বিষয়ে জানতে চাইলে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ হেল্প ডেস্কের ০২৮৯০১০৪০ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সোহেল রানা নামের কর্মকর্তা জানান সাঈদের ওয়ারিশান কাগজপত্র জমা দিলে মরদেহ দাফন সম্পন্ন করতে তাৎক্ষণিক ৩৫ হাজার টাকা দেয়া হবে।

এসএইচএস/পিআর