কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার পূর্বশর্ত হিসেবে তাদেরকে যে ১৩টি শর্ত মেনে নিতে বলেছে সৌদি আরব তা পূরণ করা কঠিন বলে মনে করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কমানো, জঙ্গিদের সমর্থন দেয়া থামানো, আল-জাজিরা টিভি বন্ধ করা, তুর্কি সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করাসহ ১৩ টি দাবি মানার জন্য কাতারের ওপর অথনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সৌদি আরব, বাহরাইন, মিসর, ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
Advertisement
এর পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখছে সৌদি আরব। অনেক বিশ্লেষক প্রশ্ন তুলছেন, সৌদি আরব এক্ষেত্রে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে কি না তা নিয়ে।
বিবিসির বিশ্লেষক ফ্রাংক গার্ডনার বলছেন, কাতারের পেছনে লেগেছে যে চারটি দেশ, তাদের শাসকরা সবাই সুন্নি মুসলিম, যাদের চোখে তাদের প্রতি দুই প্রধান হুমকি হচ্ছে ইরান এবং রাজনৈতিক ইসলাম, আর সহিংসতা। তাদের অভিযোগ, এই দুটি বিপদকেই উস্কে দিচ্ছে কাতার।
কাতারের বিরুদ্ধে এসব পদক্ষেপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৩১ বছর বয়স্ক সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। যাকে সংক্ষেপে ডাকা হয় এমবিএস বলে। অনেকেরই প্রশ্ন, এমবিএস কি বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন?
Advertisement
সৌদি আরবের নিজেরই সমস্যার শেষ নেই। তারা আমিরাতের সাথে মিলে ইয়েমেনে দু`বছর ধরে এক ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে জড়িত। সৌদি আরবের শিয়া-প্রধান পূর্বাঞ্চলে বহুদিন ধরে বিদ্রোহী তৎপরতা চলছে।
সৌদি আরব ইসলামিক স্টেট বিরোধী মার্কিন কোয়ালিশনেরও সদস্য এবং সেখানে আইএস একাধিক মসজিদে বোমা হামলা চালিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে কাতারকে বিচ্ছিন্ন করার প্রতিক্রিয়া হবে অর্থনীতি ও ব্যবসা বাণিজ্যের ওপর। যতই এ সমস্যা চলতে থাকবে, ততোই এর অভিঘাত দেশ ছাড়িয়ে গোটা অঞ্চলের ওপর পড়বে।
কিন্তু সৌদি আরবের শাসকরা সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কড়া ইরানবিরোধী কথাবার্তায় উৎসাহিত হয়েছেন। তারা চান, তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের বিরুদ্ধে উপসাগরের দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হোক।
উপসাগরের রাজতন্ত্রগুলো রাজনৈতিক ইসলামকে তাদের জন্য বিপদ মনে করে। কেনো মনে করে, তা বোঝা খুব একটা কঠিন কিছু নয়। অথচ সেই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে সৌদি।
Advertisement
কেএ/পিআর