প্রচণ্ড রোদ আর বীভৎস গরম। বাড়ির বাইরে দেড় বছরের ভাই কাভানভ রামিরেজকে নিয়ে খেলা করছিল দুই বছরের ছোট্ট মেয়ে জুলিয়েট রামিরেজ। তাদের খেলা ছিল বাড়ির বাইরে রাখা গাড়িতে ওঠা-নামা করা।
Advertisement
কিন্তু এই খেলাই যে তাদের জীবনের কাল হবে তা কি আর অবুঝ ওই শিশুরা জানতো। তাদের মা বলেছিল রোদ থেকে ঘরে এসে খেলতে। কিন্তু কিছুতেই মায়ের কথায় রাজি হয়নি দুই ক্ষুদে।
রেগে গিয়ে দুই ছেলে-মেয়েকে উচিত শিক্ষা দিতে যান তাদের মা। একপর্যায়ে বাচ্চা দুটোকে গাড়ির মধ্যে আটকে দেন বছর চব্বিশের সিনথিয়া মারি রানডলফ। আর সেই শাস্তিই কেড়ে নিল নিষ্পাপ দুটি তাজা প্রাণ। গত ২৬ মে ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ওয়েদারফোর্ডে। পুলিশের তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে।
গরমে, ভয়ে গাড়ি থেকে যখন তারা নেমে আসতে চাইবে, তখন গাড়ি থেকে বের করে দেয়ার কথা ভেবেছিলেন সিনথিয়া। তাদেরকে আটকে রাখার কিছুক্ষণ পরেই ঘরের মধ্যে চলে যান তিনি। এর পর গাড়ির ভিতরেই দমবন্ধ হয়ে মারা যায় ওই দুই শিশু।
Advertisement
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ছেলে-মেয়েকে গাড়ির ভিতর আটকে ঘরে গিয়ে গাঁজা সেবন করেছিলেন সিনথিয়া।
দুই থেকে তিন ঘণ্টা টানা ঘুমিয়েছিলেন তিনি। ঘুম থেকে উঠে দুই সন্তানের কথা মনে পড়তেই ছুটে আসেন গাড়ির সামনে। ততক্ষণে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে তারা। তৎক্ষণাৎ তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
যদিও প্রথমদিকে সিনথিয়া গোটা ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলে চালাতে চেয়েছিলেন। প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন আপনা-আপনি গাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যাতে কেউ ঘটনার কথা জানতে না পারে, সেজন্য গাড়ির কাচ ভেঙে সন্তানদের বের করেছিলেন তিনি।
তবে পুলিশি জেরার মুখে ভেঙে পড়েন সিনথিয়া। গোটা ঘটনাটি পুলিশকে খুলে বলেন। টেক্সাসের ওয়েদারফোর্ডের এই ঘটনায় চমকে গেছেন বিচারকও। তাকে সন্তান হত্যায় দোষী সাব্যস্ত করে পাঠানো হয়েছে পার্কার কান্ট্রি জেলে।
Advertisement
সেই সঙ্গে এক কোটি ২৮ লক্ষ ৯৯ হাজার ছয়শ ৬০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পার্কার কান্ট্রি শেরিফ অফিসের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ঘটনাটি গত ২৬ মে বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ ঘটেছিল।
সেসময় ওই এলাকার তাপমাত্রা ছিল ৯৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এত গরমের মধ্যে কী করে একজন মা নিজের দুই শিশুকে গাড়ির মধ্যে আটকে রাখার মতো শাস্তি দিলেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শেরিফ ল্যারি ফ্লাওয়ার। ঘটনাটির তীব্র নিন্দাও করেছেন তিনি। আনন্দবাজার।
কেএ/এমএস