আন্তর্জাতিক

কাতারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এরদোয়ান

কাতার সংকট নিরসনে সৌদি আরবের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যের চারটি দেশের দেয়া ১৩ টি শর্ত বাস্তবতা বিবর্জিত এবং বাস্তবায়ন অযোগ্য বলে জানিয়েছে দোহা। দোহার প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্ট হয়ে তাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। রোববার ইস্তাম্বুলে ঈদের নামাজ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। খবর আল জাজিরার।

Advertisement

ওই ১৩ টি শর্তের মধ্যে কাতার থেকে তুরস্কের সৈন্য সরিয়ে দেয়ার দাবিও আছে। ইতোমধ্যেই তুরস্ক সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সেনা সরিয়ে নেয়া হবে না।

এরদোয়ান বলেন, আমরা স্বাগত জানাই (কাতারের সিদ্ধান্তকে); কারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি ওই ১৩ টি শর্ত আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।

তিনি আরও বলেন, সৌদি আরব ও কাতারে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের জন্য তুরস্ক প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু কাতার সেই প্রস্তাব গ্রহণ করলেও সৌদি আরব তা নিয়ে কোনো রকম সাড়া দেয়নি। আমাদের কাছে এ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনো ফলাবর্তন না দিলেও এখন উল্টোভাবে কাতার থেকে আমাদের সেনা সরিয়ে নিতে বলা হচ্ছে। বিষয়টি তুরস্কের জন্য অসম্মানজনক বলেও দাবি করেন তিনি।

Advertisement

একের পর এক রাষ্ট্র কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন শুরু করলে, দেশটির পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছিল তুরস্ক। সৌদি আরবের নেতৃত্বে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন শুরু হওয়ার দুদিনের মাথায় চলতি মাসের ৭ তারিখ তুরস্কের পার্লামেন্টে একটি বিল পাস হয়। বিলটি ছিল কাতারে তাদের নতুনভাবে আরও সেনা মোতায়েনের; তা পার্লামেন্ট অনুমোদিত হয়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে সৌদি আরবের নেতৃত্বে নয়টি দেশ দোহার সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। গত বৃহস্পতিবার অবরোধ তুলে নেয়ার ১৩ টি শর্ত দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও বাহরাইন। দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য আগামী ১০ দিনের মধ্যে এসব শর্ত মেনে নেয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।

কাতার সরকারের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক শেখ সাইফ আল-সানি শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, এই শর্তগুলোর বিষয়ে অনেক আগে থেকেই কাতারের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে। জঙ্গিবাদ সমর্থনের কথা বলে অবৈধভাবে আমাদের স্বার্বভৌমত্ব সংকুচিত করা হচ্ছে; আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ব্যাপারেও এটা হস্তক্ষেপ।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সম্প্রতি অবরোধের ব্যাপারে যুক্তিযুক্ত ও পদক্ষেপমূলক চুক্তির তালিকা তৈরির আহ্বান জানিয়েছিলেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীও দাবি জানিয়েছিলেন পরিমিত ও বাস্তবসম্মত দাবি উপস্থাপনের। কিন্তু একপেষে এই তালিকা আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি।

Advertisement

আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে বাস্তবসম্মত না হওয়া সত্ত্বেও প্রস্তাবের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য এগুলো বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে বলেও জানান তিনি। দোহার এরকম প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্ট হয়ে এরদোয়ান তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন সৌদি আরবের নেতৃত্বে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন শুরু হয়। মুসলিম ব্রাদারহুড, আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেট (আইএস) সহ অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীকে সমর্থন ও অর্থায়নের অভিযোগে মোট নয়টি দেশ দোহার সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। তবে জঙ্গি গোষ্ঠীকে সমর্থনের সেই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে কাতার।

কেএ/এমএস