জাতীয়

তিন ঘণ্টায়ও মিললো না টিকিট

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সায়েদাবাদের পরিবহন কাউন্টারে এসেছেন মো. জাবেদ। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে সায়েদাবাদে আসেন তিনি। এরপর থেকে টিকিটের জন্য এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টারে ছুটেছেন। কিন্তু দুপুর ১২টা পর্যন্ত তার কপালে মিলেনি গন্তব্যে যাওয়ার টিকিট।

Advertisement

জাবেদ জানান, তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। শানিবারও অফিস খোলা। তবে অফিসের বড় স্যারকে বলে শনিবার ছুটি নিয়ে নিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে তার দুই ভাই ও এক বোন থাকেন। বাবা চট্টগ্রামের একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। এক ভাই কলেজে পড়েন। আর এক ভাই ও বোন হাইস্কুলে পড়েন।

তিনি বলেন, গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাবো তাই সবার জন্য নতুন পোশাক কিনেছি। কাল বাবাকে ফোন করে বলেছি আজ সকালে রওনা দিবো। সকলে আমরা পথ চেয়ে বসে আছে। কিন্তু সায়েদাবাদে এসে কোন গাড়ির টিকিট পাচ্ছি না। সবাই বলছে টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

অথচ কাল সকালে আমার পরিচিত যারা গিয়েছে তারা সবাই কাউন্টারে এসেই টিকিট পেয়েছে। যে কারণে আমিও আশা করেছিলাম আজ কাউন্টারে এসে টিকিট পাবো। কিন্তু হানিফ, শ্যামলি, আল-মোবারকা কাউন্টারে কয়েকবার গিয়েছি। সবাই বলছে টিকিট বিক্রি আগেই হয়ে গেছে, এখন যদি কেউ গাড়ি ছাড়ার আগে কাউন্টারে না আসেন সেক্ষেত্রে হয় তো টিকিটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, পরিবারের সবাই মিলে ঈদের আনন্দ ভাগা ভাগি করে নিবো এই আশা নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। কিন্তু এখন তো টিকিটই পাচ্ছি না। আরও ঘণ্টা খানেক অপেক্ষা করে দেখি টিকিটের ব্যবস্থা হয় কি না। তা না হলে লোকাল কোন পরিবহন ধরেই যেতে হবে।

জাবেদের মতো এমন বিড়ম্বনায় পড়েছেন সিলেট ও চট্টগ্রাম রুটের অনেক যাত্রী, যারা আগেই টিকিট কেটে রাখেননি। এমন আর একজন সিলেটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সায়েদাবাদে এসেছেন মো. হেমায়েত উল্লাহ। তিনি সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সায়েদাবাদে আসেন। এরপর শ্যামলি, হানিফসহ কয়েকটি পরিবহনের কাউন্টারে ঢু মরেন। সবাই বলেছেন আজকের কোন টিকিট নেই। ২৭ তারিখের আগে কোন টিকিট হবে না।

হানিফ পরিবহন কাউন্টারের ইসমাইল জানান, ২৩ থেকে ২৭ জুন সব টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। এখন নতুন করে কোন টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। কেউ টিকিট না পেলে আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা সিটের অতিরিক্ত যাত্রী নিতে পারি না। তবে যারা টিকিট নিয়ে গেছেন তাদের কেউ যদি না যাই সেক্ষেত্রে হয় তো টিকেটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে সে সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ যারা অগ্রিম টিকিট কেটেছে তারা যাবেই এটি নিশ্চিত হয়েই টিকিট কেটেছেন। আর টিকিট কাটার পর এখন কেউ তা ফেরত দিতে চাইলে টাকা ফেরত দেয়া হবে না।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যাত্রীদের তো তেমন চাপ ছিল না। সেই সময় যারা গেছেন তারা সবাই টিকিট পেয়েছেন। এমনকি কিছু কিছু গাড়ি ছিট খালি রেখেই ছেড়ে দিতে হয়েছে আমাদের। এখন সবাই যদি এক সঙ্গে যেতে চাই আমরা কিভাবে সিট ম্যানেজ করে দেবো বলেন ভাই।

Advertisement

শ্যামলী কাউন্টারের মো. ইকরামুল বলেন, টিকিট বিক্রি বন্ধ। ভাই অন্য গাড়ি দেখেন। ২৭ তারিখ পর্যন্ত কোন টিকিট পাবেন না। আমাদের কিছু করার নেই। সব টিকিটই অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে।

এমএএস/এআরএস/আরআইপি