মেহেরপুর শহরের ওয়াপদাপাড়ার বাসিন্দা নুর নাহার বেগম। দুই বছর ধরে রমজান মাস এলেই মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের রোগী এবং রোগীর স্বজনদের মাঝে বিনামূল্যে তিনি সেহেরি বিতরণ করেন। নুর নাহারের এই উদ্যোগকে স্থানীয় কয়েকজন নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকেন। তার এমন উদ্যোগ মেহেরপুর মানুষের নজর কেড়েছে।
Advertisement
নুর নাহার জানান, তিন বছর আগে তিনি সন্তানহারা হন। সন্তানের জন্য দোয়া নিতে তিনি বেছে নেন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে সেহেরী খাওয়ানোর উদ্যোগ। দুই বছর ধরে তিনি এই কাজ করছেন। রমজান মাস এলেই তিনি প্রতিদিন গভীর রাতে খাবার নিয়ে ২৫০ শয্যার মেহেরপুরের জেনারেল হাসপাতালে ছুটে যান।
সেহেরী খেতে তিনি বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে রোগীদের ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। এরপর নিজের হাতে কোনদিন সাদা ভাতের সঙ্গে ডাল, ডিম, সবজি কোনোদিন মাছ কিংবা মাংস দিয়ে সমস্ত রোগী এবং রোগীর স্বজনদের মাঝে সেহেরির খাবার বিতরণ করেন। সন্তান হারানোর কষ্ট ঘুচাতে তিনি আমৃত্যু এমন বিরল ও দৃষ্টান্তমূলক কাজ করে যাবেন বলে জানান।
নুর নাহার বলেন, আমার ছেলে মারা যাওয়ার পর গত বছর থেকে আমি নিজ উদ্যোগে হাসপাতালে থাকা রোগী এবং রোগীর স্বজনদের পুরা রমজান ভোর রাতে সেহেরি খাওয়ানো শুরু করি। আমি যতদিন বাঁচবো এই কাজটি চালিয়ে যাব। শুধু আমার ছেলের দোয়ার জন্য।
Advertisement
রোগীরা জানান, প্রতিদিন বাড়ি থেকে খাবার রান্না করে এনে নুর নাহার সেহেরি খাওয়ান। তাই হাসপাতালের খাবার না খেয়ে রোগীরা নুর নাহারের বাড়ির রান্না করা মানসম্মত খাবার খেতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।
রোগীর স্বজনরা জানান, রমজান মাসে আমরা নুর নাহারের দেওয়া সেহেরি খেয়ে রোজা রাখছি। ভোর রাতে তার খাবার পেয়ে আমরা অনেক খুশি। অনেক দূর থেকে রোগীরা আসায় ভোর রাতে খাবার পাওয়া যায় না। কিন্তু নুর নাহার আমাদের ডেকে সেহেরির খাবার দেন।
সাইফুল ইসলাম নামের একজন স্থানীয় ব্যক্তি জানান, ভোর রাতে রোগীর স্বজনদের মাঝে নুর নাহারের সঙ্গে তিনি খাবার বিতরণ করে থাকেন। গত বছর থেকে ভাত, মাছ, মাংস ও ডিম দিয়ে এই সেহেরি বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়।
আসিফ ইকবাল/এফএ/আরআইপি
Advertisement