ঈদে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাতায়াতের জন্য সড়ক-মহাসড়কগুলো যানজটমুক্ত রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তা মোটেও সন্তোষজনক নয়। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নানা পদক্ষেপের কথা বলা হলেও ফি বছর যাত্রাপথের দুর্ভোগ আর ক্লান্তি নিয়েই লোকজনকে বাড়ি ফিরতে হয়। এবার যেন কোনো অবস্থায়ই যানজট সৃষ্টি না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
Advertisement
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। এ রুটে যানজট লেগেই আছে। ৬০ কিলোমিটার রাস্তার কখনো ৩০ কিলোমিটার কখনো ২৫ কিলোমিটার আবার কখনো ২০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবারও মির্জাপুর উপজেলার কুর্নি থেকে করটিয়া পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার পাকুল্লা ও আছিমতলা এলাকায় পৃথক দুটি দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এই যানজটের সৃষ্টি হয়। শুধু দুর্ঘটনা নয় মহাসড়কে চারলেনের উন্নয়ন কাজ চলার কারণেও তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। একটু বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি কমাতে ও যানজট নিরসনে গতকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চার লেনের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজী সিটি কর্পোরেশনের তারগাছ এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পরিদর্শনের সময় এ নির্দেশ দেন তিনি। এসময় তিনি যানজট নিরসনে পুলিশের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। নেতার নির্দেশে কর্মীরা কতটা সাড়া দেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।
অন্যদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবারো ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলা হলেও পারাপার নিয়ে শঙ্কা কাটছে না যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের। দৌলতদিয়া প্রান্তের ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট নদী ভাঙনে হুমকির মুখে থাকায় মূলত এই শঙ্কার কারণ। ভাঙন অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় ঘাট দুটি বন্ধ হয়ে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তির কারণ হতে পারে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের রাজধানীর প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে প্রতিদিন হাজারো মানুষ আর যান পারাপার হয়। ঈদের সময় এই ঘাটের ব্যস্ততা বেড়ে যায় আরো কয়েক গুণ। অতিরিক্ত এ চাপ সামাল দেয়া এবং যাত্রীদের নির্বিঘ্ন পারাপার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
শুধু ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে যানজট দেখা দেয়। প্রয়োজনে সামরিক-আধাসামরিক বাহিনীকেও রাস্তার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কাজে লাগানো যেতে পারে জনস্বার্থে।ঈদে প্রতি বছরই লাখ লাখ মানুষ তাদের কর্মস্থল ছেড়ে যায় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে উৎসব করতে। সেই যাত্রাকে যতোটা সম্ভব বিড়ম্বনামুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকাই কাম্য। যাত্রাপথের বিড়ম্বনায় ঈদের আনন্দের সামান্য ঘাটতিও যেন না হয় সেটা নিশ্চিত করাই এই মুহূর্তের কর্তব্য।
Advertisement
এইচআর/পিআর