ওদের মেকআপ মুছতে নেই। মেকআপের কারসাজিতেই রূপের জৌলুস ফুটিয়ে তুলতে হয়। মেকআপের আড়ালে ঢাকতে হয়, বদনের রূপ। অন্যকে দেয়া সুখই ওদের জীবনের সুখ। যে সুখের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় জীবন নামের উপাখ্যান। কিশোরী আফসানা তেমনই এক উপাখ্যান।আফসানার কান্না, ‘আমার বন্ধু প্রিয়াঙ্কা; আমার চোখের জলে মেকআপ নষ্ট হওয়ার আগে তা (আমার চোখের জল) মুছে দিয়ে বলে, কাঁদিসনে মেকআপ মুছে যাবে। সে সবসময় আমাকে মনে করিয়ে দেয়, আমার চোখের জলের চেয়ে মেকআপের দাম অনেক বেশি।’রোববার প্রখ্যাত আলোকচিত্রী জেএমবি আকাশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তুলে ধরেছেন আফসানা নামের কিশোরী এক যৌনকর্মীর জীবনকথা। সেই স্ট্যাটাস থেকে আফসানার জীবনকথা নিয়ে মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রকাশ পায় জাগোনিউজ২৪.কমে।জীবনের কোন বেলায়, কোন পথ ধরে এই অন্ধকার গলিতে পা রেখেছেন আফসানা, তার কিছুই আর মনে নেই। মনে নেই প্রিয়জনের কথাও। শত চেষ্টা করেও আর মনের মানুষদের মুখ মনে আনতে পারে না। তবে ভুলতে পারেননি খোলা আকাশ, খেলার মাঠ, আকাশের নীল।বলেন, ‘আমি কাউকে কখনও স্মরণ করতে পারি না। একটি মুখ মনে করার জন্য আমি অনেক চেষ্টা করি; মাত্র একটি মুখ। কিন্তু কাউকে মনে করতে পারি না।’আফসানার ভাষায়, ‘পতিতালয়ের বন্ধ দরজার আড়ালে তার দম বন্ধ হয়ে আসে। সবুজ মাঠে নির্মল নিঃশ্বাস নিতে চাই।’তবে এ চাওয়াকে নিজের রোগ হিসেবে জানেন এ কিশোরী। তবুও বাসনা জাগিয়ে আফসানা স্বপ্ন নিয়ে বলেন, ‘একদিন আমরা সবুজ মাঠে যাব। সে আমাকে সবুজ মাঠে নিয়ে যাবে। সেখানে যত ইচ্ছা আমি মুক্ত নিঃশ্বাস নেব। আমার একটাই আশা, ওইদিন আমি কাউকে দেখতে পাব; যেদিন আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসবে। জীবনে একবারের জন্য হলেও, আমি অনুভব করতে চাই যে, আমি একা নই।’আফসানাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়েই মিশে যায়। জীবনের স্পর্শ ওদের তেঁতো হয় শেষ বেলাতেও। তবুও স্বপ্ন নিয়েই বেঁচে থাকুক আফসানারা। মাঠের সবুজ প্রান্তর দেখার স্বপ্ন, স্বপ্ন থাকুক আকাশের নীল দেখার।এএসএস/বিএ
Advertisement