বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ এবং সড়কপথে ট্রানজিট সুবিধা চেয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরা। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বাংলাদেশের কাছে এ সুযোগ চান।বিবিসিকে তিনি বলেন, ভারতের পার্লামেন্টে স্থল সীমান্ত বিল পাস হওয়ার পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে আস্থা তৈরি হয়েছে তাতে তিনি আশা করেন এবার এই বিষয়গুলোও ঢাকার কাছে উত্থাপন করবে।এদিকে ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে চলতি বছরেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরে মানিক সরকারও তার সঙ্গী হবেন, আর এই পটভূমিতে ত্রিপুরার দাবিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের চারটি রাজ্য- পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরার মধ্যে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে ভাল সম্পর্ক ত্রিপুরার সঙ্গেই।ত্রিপুরার গত সতেরো বছরের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত হৃদ্যতার কথাও সুবিদিত।মানিক সরকার জানান, বাংলাদেশের কাছে তাদের প্রথম চাওয়া হবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ। তার কথায়, ‘ত্রিপুরা-সহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো যদি চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারে, সেখান থেকে মালামাল পরিবহনের সুযোগ পায় তাহলে লাভ হবে দু’দেশেরই।`তিনি আরো বলেন, এই প্রস্তাবটি বাংলাদেশের বিবেচনায় আছে বলেই আমি জানি। তারা সরাসরি এটি কখনও নাকচ করে দেননি, আবার পরিষ্কার করে ছাড়পত্রও দেননি।ত্রিপুরার প্রয়োজনে বাংলাদেশ এর আগে একাধিকবার তাদের নদীপথ ও আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করতে দিয়েছে, এখন সড়কপথেও বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যোগাযোগের সুবিধা চায় রাজ্যটি। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য ইদানিং ঢাকা-আগরতলা বাস পরিসেবা বারবার ব্যাহত হয়েছে, কিন্তু ত্রিপুরা সরকার জানায়- এই পরিসেবা কলকাতা পর্যন্ত সম্প্রসারিত করলে সমস্যা অনেকটা মিটে যায়।এ প্রমঙ্গে মানিক সরকার বলেন, সময় সময় এই পরিসেবা চলে, আবার থমকে যায়। এই মুহূর্তে ত্রিপুরার লোকজনকে আগরতলা থেকে ঢাকায় গিয়ে আবার কলকাতার বাস ধরার জন্য অপেক্ষা করতে হয় -এভাবেই চলে আসছে।তিনি আরো বলেন, আমরা চাইছি বাংলাদেশ যেন আমাদের বাসকে আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত অবধি যাওয়ার অনুমতি দেয়। এতে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।এই মুহূর্তে ঢাকা তা দিতে পারবে কি না সেটা অন্য প্রশ্ন, কিন্তু সম্ভবত শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের সুবাদেই মানিক সরকার এ বিষয়ে যথেষ্টই আশাবাদী।ত্রিপুরার বাস যদি আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ যাবার অনুমতি পায় -তাহলে সেটা হবে বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারতের সড়কপথে ট্রানজিট পাওয়ারই সামিল।এসএইচএস/আরএস/আরআই
Advertisement