খেলাধুলা

সেই ইংল্যান্ডেই সাত বছর পর আমিরের ‘শাপমোচন’

সেই ইংল্যান্ড, সেই লন্ডন। মোহাম্মদ আমিরের ক্যারিয়ার থেকে সব কেড়ে নিয়েছিল সাত বছর আগে। আমিরের কাছে ইংল্যান্ড এবং লন্ডন তাই অভিশপ্তই। ২০১০ সালে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন পাঁচ বছরের জন্য। সঙ্গে আরও দু’জন সালমান বাট এবং মোহাম্মদ আসিফ। সেই লন্ডনেই, সাত বছর পর এসে শাপমোচন করলেণ মোহাম্মদ আমির। তার বলের আগুণে পুড়ে ছারখার হয়ে গেলো পুরো ভারত।

Advertisement

জুয়াড়িদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্রিকেটকেই কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছিল সালমান বাটরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন মাত্র ১৮ বছর বয়সী পাকিস্তান ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল প্রতিভা মোহাম্মদ আমির। দোষি প্রমাণিত হওয়ার পর পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলেন। অবশেষে ক্রিকেটে ফিরলেন ২০১৫ সালে।

এক বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রস্তুত করার পর ২০১৬ সালের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে আবারও ক্রিকেটে ফেরেন মোহাম্মদ আমির। ফেরার পর থেকে যেন পুরনো আমিরেরই দেখা মিলছিল। সর্বশেষ রোববার নিজের বলের আগুন ঝরালেন ইংল্যান্ডের মাটিতেই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে, ভারতের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়ার মধ্য দিয়ে। একই সঙ্গে দলকে জিতিয়ে নিজের পাপ মোচন করলেন যেন তিনি।

সাত বছর আগে একদিন যে ইংল্যান্ডের মাটিতে দাঁড়িয়ে দল ও দেশের মাথা ছোট করে দিয়েছিলেন, সে দেশ এবং সে শহরে দাঁড়িয়েই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে দলকে বল হাতে নেতৃত্ব দিয়ে জেতালেন পাকিস্তানকে।

Advertisement

ফাইনালে টস জিতে পাকিস্তানকেই ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় ভারত। ফাখর জামানের সেঞ্চুরিতে ভারতের সামনে ৩৩৯ রানের বিশাল লক্ষ্য বেধে দেয় পাকিস্তান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মোহাম্মদ আমিরের বলে একে একে ফিরে যান শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি।

অথচ এই তিন স্তম্ভই গোটা টুর্নামেন্টে ভারতীয় দলের ব্যাটিংকে টেনেছেন। ফাইনালে এসে যেন ইংল্যান্ডের মাঠে বল হাতে আগুন ঝরিয়ে ফের একবার নিজের ফিরে আসার বার্তা দিলেন আমির।

চিরকালই ভক্ত কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আক্রামের। বল হাতে কিছু করার চেষ্টাও তাকে দেখেই। ছোট থেকেই গলির ক্রিকেটে অভ্যস্ত ছিলেন। পাঞ্জাব প্রদেশের গুজ্জর পরিবারের সন্তান আমির ২০০৭ সালে চোখে পড়ে যান ওয়াসিম আক্রামের। এরপর একে একে ঘরোয়া ক্রিকেট, অনূর্ধ্ব ১৯ দল হয়ে ২০০৯ সালে পাকিস্তান দলে অভিষেক।

বিশ্ব ক্রিকেট যখন ধীরে ধীরে আমিরকে চিনতে শুরু করেছে, যখন ভাবা হচ্ছে ওয়াসিম আক্রমের পর ফের একজন ভালো বাঁ-হাতি পেসার পেয়ে গেছে পাকিস্তান, সে সময়ই, ২০১০ সালে স্পট ফিক্সিংয়ের জড়িয়ে ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ বছরের বেশি সময় আমির নষ্ট করে ফেলেন। তবে তাতে তিনি যে দমে যাননি, সেটাই আরও একবার প্রমাণ করে ছাড়লেন মোহাম্মদ আমির।

Advertisement

আইএইচএস/পিআর