যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগে চাঁদপুরে এক কলেজ শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। মুসলিম সরদার মিশু বর্তমানে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সরকারি জসিমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। এরআগে তিনি চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, মিশু ও তার পরিবারের কয়েকজন মিলে স্ত্রী কুলসুমা বেগমের ওপর দফায় দফায় নির্যাতন চালিয়েছেন।
Advertisement
শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও কামড়ের চিহ্ন নিয়ে কুলসুমা এখন হাসপাতালে ভর্তি। শিক্ষক মিশুর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
কুলসুমার স্বজনরা জাগো নিউজকে জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথমে শহরের বিটি রোড়ের ভাড়া বাসায় কুলসুমার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে অচেতন অবস্থায় সেখান থেকে তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে মিশুর পরিবারের আরও কয়েক সদস্য মিলে তার ওপর দ্বিতীয় দফায় নির্যাতন চালান। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় কুলসুমাকে। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তৃতীয় তলার ৬ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কুলসুমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
কুলসুমার স্বজনরা আরও জানান, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন মিশু। যৌতুক হিসেবে তাকে ৫ লাখ টাকা দেয়াও হয়েছে। পরে আরও টাকা চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে শুরু হয় নির্যাতন।
Advertisement
চিকিৎসাধীন অ্যাড. কুলসুমা জাগো নিউজকে বলেন, ‘লালমনিরহাট থেকে বদলি হয়ে আবার চাঁদপুর আসার জন্য আমার কাছে আবারও ৫ লাখ টাকা দাবি করে মিশু। কিন্তু আমি তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করি।’
ছয় মাস আগেও তার উপর নির্যাতন চালানো হয় উল্লেখ করে কুলসুমা জানান, ওই ঘটনার পর তারা আলাদা থাকছিলেন।
কুলসুমা জানান, শুক্রবার বিকেলে বাসায় ঢুকে তাকে মারধর করতে শুরু করেন মিশু। এক পর্যায়ে কুলসুমার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
স্থানীয়রা জাগো নিউজকে জানায়, অচেতন অবস্থায় কুলসুমাকে সিএনজিতে ওঠান মিশু এবং তার ভাই। সেখান কুলসুমাকে নিয়ে যাওয়া হয় মতলবের বারঠালিয়া গ্রামের বাড়িতে ।
Advertisement
নির্যাতিত কুলসুমা ও তার নিকটাত্মীয় চাঁদপুর সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সুমনের দাবি, ‘মিশু তার বাড়িতে নিয়ে তার ভাতিজা ও পরিবারের আরও কয়েকজন মিলে প্রায় এক ঘণ্টার মতো মারধর করেন কুলসুমাকে।’
শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে চাঁদপুর শহরের তালতলা এলাকা থেকে মিশুকে কুলসুমার স্বজনরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিশুর বাবা কাজীমুদ্দিন সরদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি মুর্খ মানুষ, তারা (মিশু ও তার স্ত্রী) দুই জনই শিক্ষিত। আমি বাড়িতে থাকি, কাজকর্ম করি। তাই তাদের মধ্যে কী হয়েছে তা জানি না। তবে ঘটনাটি শুনেছি।’
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ালি উল্যাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘পাবলিক আটক করে মিশুকে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে। তার বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ করে মামলা হয়েছে। আমরা তাকে আদালতে প্রেরণ করেছি।
ইকরাম চৌধুরী/এনএফ/পিআর