গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলগুলোতে এ বছর লাল মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে আমদানিও প্রচুর। কিন্তু এই ভরা মৌসুমে পাকা ও শুকনো মরিচের দাম নেই। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। জেলার চরাঞ্চলের বড় হাট ফুলছড়ি ঘুরে জানা গেছে মরিচ চাষিদের দুর্ভোগের কথা।স্থানীয় ব্যবসায়ী ভব রায় জানালেন, ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ফুলছড়ি হাট। শনিবার আর মঙ্গলবার দু’টি নির্ধারিত দিন। পাশের ফজলুপুর ,এরেন্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি সংলগ্ন চর থেকে নৌকায় মরিচের বস্তা নিয়ে দলে দলে চাষিরা আসেন। লাল মরিচের স্তুপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রতিবার ভাল দাম পেলেও এবার মরিচ নিয়ে দুর্ভাবনায় চাষিরা। ঢাকা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ থেকে বড় ব্যবসায়ীরা কিছুটা কম আসছেন। ফলে সুযোগ নিচ্ছে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা। অসহায় চাষি বাধ্য হচ্ছনি আত্মসমর্পণে।গজারিয়া ইউনিয়নের গলনার চরের মরিচ চাষি চান্দু শেখ বললেন, প্রতি মণ শুকনো মরিচ ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। অথচ গত বছর মৌসুম সময়ে প্রতিমণ শুকনো মরিচের মূল্য ছিলো ৫ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার ২’শ টাকা।দেলুয়াবাড়ির চরের আফসার মোল্লা জানান, ধার দেনা করে অন্য ফসলের সাথে মরিচ করি। এবার হামাক বুঝি ডোবা নাগে! দালালেরা দাম দিব্যারই চায় না।ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির প্রতিনিধি আবুল কালাম জানালেন, ফুলছড়িসহ গাইবান্ধার চরের মরিচের প্রচুর চাহিদা। মানও অনেক ভাল। কিন্তু সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় মার খাচ্ছে চাষি।কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গাইবান্ধা জেলায় ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর জমিতে মরিচ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে জেলার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীবেষ্টিত সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের আবাদ হয়েছে অনেক বেশি।জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, মূল্য কম থাকায় কৃষকরা মরিচ বিক্রি করে তাদের উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না। ফুলছড়ির আশে পাশের এলাকায় সংরক্ষণাগার স্থাপন করা গেলে চাষিরা উপকৃত হতো।এসএস/আরআই
Advertisement