ঈদে রাজধানীর গুলশান ও ধানমন্ডির মতো অভিজাত এলাকায় ডাকাতির পরিকল্পনা নেয় সক্রিয় একটি চক্র। ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক মাস আগে থেকে বিভিন্ন অপতৎপরতায় অংশ নেয় তারা। ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় পরীক্ষামূলক কয়েকটি ডাকাতিও করে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি চক্রটির। র্যা বের হাতে ধরা পড়ে সক্রিয় এ চক্রের আট সদস্য।
Advertisement
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে ভুয়া ডিবি চক্রের আট সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব- ২। দুপুরে কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (সিও) ইফতেখারুল মা’বুদ।
তিনি জানান, বেশকিছু প্রতারণার অভিযোগ পাওয়ার পর গোয়েন্দা অভিযানে নামে র্যাব-২ এর একটি দল। পরে ধানমন্ডির সোবহানবাগ এলাকা থেকে ভুয়া ডিবি চক্রের আট সদস্যকে আটক করা হয়। পরে তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
তারা হলেন- জুয়েল হোসেন ওরফে জুয়েল রানা (২৭), মো. হেমায়েত হোসেন ওরফে বিডিআর হেমায়ত ওরফে জসিম উদ্দিন (৫১), শেখ নাফিজ ওরফে শহর আলী, ফরিদুল ইসলাম ফরিদ (২৯), মোরশেদুল ইসলাম খান (৩৯), মোহাম্মদ আলী (৩২), আইয়ূব খান (২৫) ও স্বপন সরকার (৩৬)।
Advertisement
তাদের কাছ থেকে এ সময় একটি বিদেশি অস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি চাপাতি, ডিবির ব্যবহৃত ছয়টি জ্যাকেট, হ্যান্ডকাপ, ওয়াকিটকি সেট ও একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, রাস্তায় হঠাৎ চেকপোস্ট বসিয়ে দামি গাড়ি ডাকাতি, আসামি ধরা ও তল্লাশির নামে জিম্মি করে ডাকাতির পরিকল্পনা ছিল তাদের। এর আগে, ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে কৌশলে বিভিন্ন বাসায় ঢুকে ডাকাতি করেছে তারা। এসব কারণে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তাদের একেকজনের নামে চার থেকে নয়টি পর্যন্ত মামলাও রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ধানমন্ডি এলাকার একটি বাসায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিয়েছিল তারা। এর আগেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। ঈদ সামনে রেখে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় বড় ধরনের ডাকাতির পরিকল্পনা ছিল তাদের। এজন্য তারা ডিবি পুলিশের জ্যাকেট ও ওয়াকিটকি ক্রয় এবং মাইক্রোবাস ভাড়া নেয়।পরীক্ষামূলকভাবে তারা হাইওয়ে ও টাঙ্গাইলে ডাকাতি করে।
এদিকে, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, রমজান ও ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অর্ধ শতাধিক ভুয়া ডিবি পুলিশ, ডাকাত ও ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Advertisement
ডিএমপি জানায়, ঈদে রাজধানীতে যাতে ডাকাতি-ছিনতাই এবং জিম্মি করে সর্বস্ব লুটের ঘটনা না ঘটে সে জন্য অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন বলেন, ঈদ সামনে রেখে একটি চক্র সবসময় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করে। এ বছরও সক্রিয় অর্ধশত ভুয়া ডিবি সদস্য, ছিনতাই ও ডাকাত আটকের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, যদি কেউ চাঁদাবাজি কিংবা হয়রানি করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঢাকা শহরের প্রতিটি নাগরিককে সমানভাবে নিরাপত্তা দিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অঙ্গীকারবদ্ধ এবং সে লক্ষ্যে জীবনবাজি রেখে নিরলসভাবে কাজ করছে।
জেইউ/এএইচ/এমএআর/আরআইপি