সুর এবং সঙ্গীতের চর্চাটাকে আমরা যেমন কেবল মনের খোরাক বলে ভাবি, তা কিন্তু পুরোটা ঠিক নয়। এ সুর যেন মানুষের রক্তে মিশে আছে। ঠিক কী কারণে, কবে থেকে, মানুষ সুরের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে তা জানা যায় না। বনের পাখির কলতান হয়তো সুরের বীজটা বুনে দিয়েছে আদিম যুগে তার মনে। কিন্তু এই সঙ্গীতের পেছনে মানুষের যে চেষ্টা, যে শ্রম এবং যে ভালোবাসা কাজ করেছে হাজার হাজার বছর ধরে, তার ফলাফলটা আমরা খালি চোখে যা দেখি তার চেয়ে অনেক বেশি গভীরে প্রোথিত। মানব সভ্যতার ইতিহাস যুগে যুগে পাল্টে দিতে সুর-সঙ্গীত আর বিজ্ঞান একযোগে কাজ করেছে বারবার। আসুন সেই গল্পটা আজ আপনাদের শোনাই।
Advertisement
প্রয়োজন হচ্ছে উদ্ভাবনের জননী। এই কথাটা আমরা সবসময় শুনে অভ্যস্ত। কিন্তু আসলেই কি সবসময় এটা সত্য? মরিয়া হয়ে মানুষ তার সেরা চেষ্টাটা করে সন্দেহ নেই, তবে অনেক সময় খেয়ালের বশে মানুষ অদ্ভুত সব কাণ্ড করে বসে যেটা পৃথিবীর ইতিহাসের গতিপথ বদলে দেয়। স্টিভেন বার্লিন জনসন তার ‘ন্যাচারাল হিস্টরি অব ইনোভেশন’ বইতে কিছু অদ্ভুত বিষয়ের অবতারণা করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন পৃথিবীর কার্যকর ও বিখ্যাত আবিষ্কারগুলো কীভাবে এসেছে আর কীভাবে ভালো উদ্ভাবনী চিন্তার উন্মেষ ঘটে। আমি তার কিছুটা এখানে বলে নেই আগে, তার পরে মূল বক্তব্যে ফিরছি।
চলুন ফিরে যাই প্রাগৈতিহাসিক কালে। আজ থেকে প্রায় ৪৩ হাজার বছর আগে এখন যেখানে স্লোভেনিয়া অবস্থিত সেখানে এক ভল্লুক জন্মের পর পরই মারা যায়। তার প্রায় এক হাজার বছর পর একটি ম্যামথ মারা যায় দক্ষিণ জার্মানিতে। আর কয়েকশ’ বছর পরে কাছাকাছি এলাকায় নিহত হয় এক গ্রিফন শকুন। এদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে বা কেন হয়েছে তার প্রায় কিছুই আমরা জানি না আজ। কিন্তু সময় এবং স্থানভেদে এরা যতই দূরে থাকুক, যতই ভিন্ন প্রজাতির হোক না কেন এদের সবার ভাগ্যে একটি কমন বিষয় জুটেছিল। এদের মৃত্যুর পরে মানুষের হাতের ছোঁয়াতে এদের হাড় থেকে বাঁশি তৈরি করা হয়েছিল। আর্কিওলজিক্যাল রিসার্চের সময় খনন করে যে হাড় পাওয়া যায়, তার কার্বন টেস্ট করে বিজ্ঞানীরা এগুলো জানতে পেরেছেন।
চিন্তার সুতোগুলোকে বোনা যাক এখন। আজ থেকে ৪০ হাজার বছর আগে ফিরে যান। ভাবুন আপনি গুহাবাসী এক আদিম মানুষ। আপনার পূর্বপুরুষরা আগুন জ্বালানোটা রপ্ত করেছেন ভালোভাবে এবং আপনাকে শিখিয়ে দিয়েছেন তা। খুব সাধারণ কিছু শিকার করার হাতিয়ার তৈরি করেছেন আপনি। জেনেছেন কীভাবে পশুর চামড়া দিয়ে পোশাক তৈরি করতে হয় আর তা দিয়ে শীতের দিনে দিব্যি আরামে থাকা যায়। এরপরে আপনি কি তৈরি বা আবিষ্কারের কথা চিন্তা করবেন? আপনি কি বাঁশি তৈরি করার কথা ভাববেন পশুর হাড় দিয়ে? কেন? খুব আশ্চর্য মনে হয় না ব্যাপারটা? কী দরকার হাড়ের মধ্যে ফুঁ দিয়ে বিশেষ একটা শব্দ তৈরি করার? আমাদের পূর্বপুরুষরা কিন্তু ঠিক এই কাজটাই করেছিল।
Advertisement
আশ্চর্য মনে হলেও এ রকমের ঘটনা মানবজাতির ইতিহাসে বারবার ঘটেছে। বেঁচে থাকার প্রয়োজন মানুষ কত কিছুই করে। তার বংশবৃদ্ধির জন্য, শিশুদের খাবার যোগান দেয়ার জন্য, বিরূপ পরিবেশে প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার জন্যে একটু একটু করে প্রজন্মে থেকে প্রজন্মান্তরে অনেক উদ্ভাবন, অনেক দক্ষতা সে গড়ে তুলেছে। অন্যদিকে এমন কিছু কিছু আবিষ্কারও সে করেছে যেটার আসলে আপাত কোনো প্রয়োজন সে সময় ছিল না।। অনেক নতুন চিন্তা এবং উদ্ভাবন হয়েছে শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য, আনন্দের জন্য। অবাক করার মতো ব্যাপার হচ্ছে এসব আপাত নিরীহ উদ্ভাবন সমাজ, রাজনীতি এবং বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে প্রায়শই ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে।
যেমন ধরুন আধুনিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, কম্পিউটারের কথা। প্রচলিত গল্প হলো যে কম্পিউটার এসেছে মিলিটারি টেকনোলজি থেকে। কারণ প্রথম দিকের কম্পিউটারগুলো তৈরিই হয়েছিল যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা গুপ্ত সংকেতের পাঠোদ্ধার করার জন্য অথবা মিসাইল/রকেট এর ট্রাজেক্টরি মাপার জন্য। কিন্তু যদি একদম গোড়ায় ফিরে যেতে চান, তাহলে দেখবেন, আধুনিক কম্পিউটারের ইতিহাস অনেক মজার, অনেক সঙ্গীতময়। খেলার ছলে কিংবা সুর তৈরির বাহানায় মানুষ যে বুদ্ধি বের করেছিল, পরবর্তীতে সেটাই কম্পিউটার আবিষ্কারের কাজে আসে। বাঁশির কথা ধরুন, মূল ব্যাপারটা হলো, একটা টিউবের ভেতরে বাতাস প্রবাহিত করলে সেটা একটা নির্দিষ্ট শব্দ তৈরি করে, টিউবের দৈর্ঘ্য বাড়ালে-কমালে, শব্দের সুরটাও পরিবর্তন হয়। এই মূলনীতিকেই কিছুটা পরিবর্তন করে আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রথম মিউজিক্যাল অর্গান তৈরি করা হয়। হয়ত কোনো এক বুদ্ধিমান মানুষ তখন ছোট ছোট লিভার আঙুল দিয়ে ধাক্কা দিয়ে সুর তৈরি করার বুদ্ধি বের করে। আর এ থেকেই পরবর্তীতে মিউজিক্যাল কি-বোর্ড আবিষ্কার হয়। এই কি-বোর্ড পরবর্তীতে আরও পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত হয়ে প্রথমে ক্ল্যাভিকর্ড, এরপরে হার্পসিকর্ড এবং পরে পিয়ানোতে রূপ নেয়। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে কিছু উদ্ভাবক নতুনভাবে এই যন্ত্রগুলোকে কাজে লাগানোর চেস্টা করেন। তারা কি-বোর্ড চেপে সুর না বের করে তা দিয়ে অক্ষর ছাপানোর চেষ্টা করেন, আবিষ্কার হয় টাইপ রাইটার। প্রথম টাইপরাইটার এর নাম কী দেয়া হয়েছিল জানেন? ‘দ্য রাইটিং হার্পসিকর্ড’ যার আক্ষরিক বাংলা করলে দাঁড়ায় এমন এক সুর যন্ত্র যা লিখতে পারে।
বাঁশি এবং সুরের খেলা কিন্তু আরো অনেক শক্তিশালী আবিষ্কারের মূলমন্ত্র হয়েছিল। আজ থেকে এক হাজার বছর আগের কথা। তখন মধ্যপ্রাচ্য ছিল সারা দুনিয়ার শিক্ষাদীক্ষার প্রাণকেন্দ্র। মুসলিম বিজ্ঞানীরা তখন রসায়ন, মহাকাশবিদ্যা, গণিত এবং চিকিৎসায় সবচেয়ে এগিয়ে, যদিও তাদের অনেকেই খুব ধার্মিক ছিলেন না। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় তাদের অবদান আজও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।
সেই সময় বাগদাদের তিন ভাই মিলে এমন এক যন্ত্র তৈরি করেন, যা নিজে নিজে সুর তৈরি করতে পারে। আসলে এটি ছিল বিরাট একটি মিউজিক বক্স। কিন্তু এটা যেন তেন মিউজিক বক্স নয়, এর একটা বিশেষত্ব ছিল। এটাকে বিভিন্নভাবে ট্রেইন করা যেত, যাতে সেটা ভিন্ন ভিন্ন মিউজিক বাজাতে পারে। একটি ঘূর্ণায়মান সিলিন্ডারের উপরে পিন রেখে শব্দ তৈরি করা হত সে যন্ত্রে। চাবি দিয়ে স্প্রিংয়ের মতো দম দেয়া যেত। যদি ভিন্ন সুরের কোনোকিছু বাজাতে হয় তাহলে সিলিন্ডারটাকে পরিবর্তন করতে হত। প্রতিটা আলাদা সুরের জন্য আলাদা সিলিন্ডার। ঠিক যেন ৭০-৮০ এর দশকের ক্যাসেট প্লেয়ার। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার, সেটা আবিষ্কার হয়েছিল হাজার বছর আগে! কিন্তু যে কারণে এই যন্ত্রটির আবিষ্কার বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় তা হলো, এটা ছিল প্রোগ্রামেবল।
Advertisement
এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ধারণা যে, একই যন্ত্রকে দিয়ে চাহিদা অনুসারে একাধিক ভিন্ন রকমের কাজ করানো সম্ভব। শুধু দরকার যন্ত্রের (hardware) চালনা করার সময় নির্দেশনাকে (software) পরিবর্তন করা। এই যন্ত্রের মাধ্যমে প্রথমবারের মকো হার্ডওয়্যার আর সফ্টওয়্যারের মিলন ঘটেছিল। খেয়াল করে দেখুন, কোনো যুদ্ধজয়ের বাসনা থেকে কিংবা অত্যাবশ্যকীয় কোনো সমস্যা সমাধান থেকে কিন্তু এই মহাগুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ঘটেনি। সেই যন্ত্রটির সুর যে খুব মধুর বা নির্ভুল ছিল তাও নয়। কিন্তু একটি যন্ত্র নিজে নিজে একেকবার একেক সুর বাজাতে পারছে, এটা দেখার আনন্দ থেকেই তাদের এই সাফল্য। এরপরে আরও অনেকে এ ধরনের যন্ত্র তৈরি করেন এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে। প্রোগ্রামেবল মেশিন এর ধারণাটাকে কিন্তু প্রায় ৭০০ বছর বাঁচিয়ে রেখেছিল মিউজিক। সপ্তদশ শতকে অভিজাত পার্সিয়ানদের প্রতীক ছিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সুর বাজাতে পারে এমন যন্ত্র। বাসার ড্রয়িংরুমে তারা আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে কোডেড সিলিন্ডারের তৈরি বিভিন্ন যন্ত্র রাখত, যেগুলো সুর তৈরি করা ছাড়াও নির্দিষ্টভাবে স্বয়ংক্রিয় মুভমেন্ট করতে পারত। এগুলোকে বলা হয় অটোম্যাটা, রোবটের আদি পূর্বপুরুষ। অটোম্যাটার সবচেয়ে বিখ্যাত প্রয়োগটা করেন ফরাসি বিজ্ঞানী জ্যাক দ্য ভকানসন। তার যন্ত্রটি ছিল একটি স্বয়ংক্রিয় রোবট যেটা কি না বাঁশি বাজাতে পারে, সেটাকে আবার প্রোগ্রামও করা যেত।
এই যন্ত্র তৈরি করার পরে ভকানসনের মাথায় দারুণ একটা আইডিয়া আসে। যদি একটি যন্ত্রকে প্রোগ্রাম করে যেকোনো মিউজিক বাজানো শেখানো যায়, তাহলে কেন সেভাবে একটা যন্ত্রকে দিয়ে ইচ্ছামতো পোশাক তৈরি করানো যাবে না? সিলিন্ডারের মুভমেন্ট দিয়ে কেবল শব্দ তৈরি না করে, কাপড় বোনার যন্ত্রে সেটাকে দিয়ে চাহিদামতো বিভিন্ন নকশার রঙিন প্যাটার্ন তৈরি করাও তো সম্ভব। মূল ধারণাটা কিন্তু একই, তবে মিউজিক থেকে বের হয়ে তিনি প্রোগ্রামেবল ফ্যাব্রিক তৈরি করার যন্ত্র আবিষ্কার করলেন। নতুন নকশার কাপড় চাই, কেবল দরকার সিলিন্ডারের পিনের সংকেত পরিবর্তন করা যাতে সময়মতো বিভিন্ন রঙের সুতা সেটা বুনতে পারে।
সে সময় এই ধাতব সিলিন্ডারগুলো ছিল বেশ ব্যয়বহুল এবং অনেক সময় লাগত সেগুলো তৈরি করতে। এর অর্ধশতাব্দী পর জ্যাকার্ড নামক আরেক ফরাসি বৈজ্ঞানিক ধাতব সিলিন্ডারের পরিবর্তে শক্ত কাগজের পাঞ্চকার্ড দিয়ে একই কাজ করা বুদ্ধি বের করেন, এতে সময় ও খরচ অনেক কমে যায়। এই সেই পাঞ্চকার্ড সিস্টেম যেটা চার্লস ব্যাবেজ তার আবিষ্কৃত প্রোগ্রামেবল গণনা যন্ত্রে ব্যবহার করেন যা কি না আজকের কম্পিউটারের আদি পুরুষ হিসেবে বিবেচিত হয়। কম্পিউটার প্রোগ্রাম করতে এই তো সেদিনও (৭০ এর দশকে) পাঞ্চকার্ড ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হত।
এবার একটু ভেবে দেখুন, আধুনিক কম্পিউটারের আবিষ্কারের নিয়ামক কী ছিল? মিলিটারি বা যুদ্ধের অবদান অবশ্যই ছিল। কিন্তু যদি প্রায়োগিকভাবে উৎস খোঁজা হয় তাহলে বোঝা যাবে, কম্পিউটার আবিষ্কারের পেছনে আরও অনেক বিল্ডিং ব্লক ছিল, যেমন মিউজিক বক্স, অটোম্যাটা, রোবট বংশীবাদক, কি-বোর্ড, ফ্যাব্রিক প্যাটার্ন তৈরি, পাঞ্চকার্ড ইত্যাদি। এতো কেবল একটা উদাহরণ, খুঁজলে এমন আরও বহু উদাহরণ দেয়া যাবে : যাদুঘর, রাবার, সম্ভাবনার সূত্র, ইন্সুরেন্সের ব্যবসা ইত্যাদি অনেক ধারণা খেলাচ্ছলে আবিষ্কার হয়েছে।
প্রয়োজন সবসময় আসলে উদ্ভাবনের জননী নয়। মানব মন যখন খুব আনন্দে থাকে, মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের পর যখন সুকুমার বৃত্তির চর্চার একটা মনন তৈরি হয় তখন কিন্তু চিন্তার কোনো সীমা থাকে না। মানুষ মৌলিকভাবেই অজানাকে জানতে চায়, ভয়কে জয় করে, নিত্যনতুন সম্ভাবনার দুয়ারে কড়া নেড়ে দেখে, কোথাও কিছু পাওয়া যায় কি না। মানুষের এই স্বভাবটা এতটাই সহজাত, যে বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন দেশে এবং সময়ে বিভিন্ন কালচারে এই অনুসন্ধিৎসু মন মানব জাতির ইতিহাসে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। খুব সাধারণ একটা বিচ্ছিন্ন চিন্তা বা কাজ যেটা খেলার ছলে মনের আনন্দে মানুষ শুরু করেছিল, সেটাই দেখা যায় ভবিষ্যতে বিরাট বড় কোনো আবিষ্কারের কাজে লাগে।
এই দর্শনের প্রয়োগটা কিন্তু আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে করতে পারি। শিশুদের আমরা কীভাবে শিক্ষা দেব, কিংবা কর্মক্ষেত্রে আমরা কীভাবে উদ্ভাবনী কাজকে উৎসাহিত করব সেটা নিরূপণ করা যেতে পারে এই শিক্ষা থেকে। ভাবুন তো একবার সেই অনুসন্ধিৎসু যুবকের কথা, যে সপ্তদশ শতাব্দীতে বসে ভাবছিল ১৮শ, ১৯শ কিন্বা বিংশ শতাব্দীটা কেমন হবে, হয়ত বা চিন্তায় তার আসত কোন কাজটা করলে সমাজে একটা বিরাট পরিবর্তন আসবে? রোবট, অটোম্যাটিক মেশিন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এসব কিছুই হয়ত তার মাথায় আসেনি। অভিজাত পার্সিয়ানদের জন্য প্রোগ্রামেবল বাঁশি তৈরি করাটা হয় তো বা তার কাছে একটা খেলাই ছিল, কে জানত এই খেয়ালি কাজগুলোই ভবিষ্যত শতাব্দীর সভ্যতার ভিত্তি রচনা করবে?
এবার আজকের দুনিয়ার কথা ভাবুন। ফেসবুক, গুগল, অ্যাপল, মাইক্রসফট এ রকম অনেক কোম্পানির শুরুটাও কিন্তু খেয়ালের বশে। এদের প্রতিটা আবিষ্কার দুনিয়ার চেহারাটা যেভাবে পাল্টে দিয়েছে তা ভাবার অবকাশ নেই আজ। তেমনি ভবিষ্যতে কোনো ব্রেক থ্রু আবিষ্কার গোটা দুনিয়াকে আবার কাঁপিয়ে দেবে সেটা হয়ত এ মুহূর্তে খেয়ালি কিছু যুবকের খেলার মাঝেই খুঁজে পাওয়া যাবে। তাই প্রয়োজন ছাড়াও শখের কাজগুলোও চালিয়ে যান, অন্যের খেয়ালি কাজের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হোন, কে জানে আপনার এতটুকু উৎসাহ হয়ত কাউকে দুনিয়া পালটে দিতে সাহায্য করবে।
বিএ/এমএস