অর্থনীতি

ক্রেতা সমাগমে মুখরিত যমুনা ফিউচার পার্ক

আর ক’দিন পরই খুশির ঈদুল ফিতর। নতুন পোশাক ছাড়া যেন এ খুশির একটা কমতি থেকেই যায়। তাই পরিবার-পরিজনের সঙ্গে  ঈদের খুশি ভাগাভাগি করতে এরই মধ্যে বিভিন্ন মার্কেটে ঢুঁ মেরেছেন অনেকে। রাজধানীর অন্যতম অভিজাত শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কেও জমে ওঠেছে ঈদ কেনাকাটা।

Advertisement

শনিবার যমুনা ফিউচার পার্ক ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে। ১০ রমজানের পর থেকে প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকছে দেশের অভিজাত এ বিপণি-বিতান।

তবে গত দু’দিন ধরে যমুনা ফিউচার পার্কে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ভিড়ের মধ্যে দিন শেষে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে কেনাকাটা।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ কেনাকাটায় যমুনা ফিউচার পার্ক ছিল অভিজাত শ্রেণির ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ। তবে মধ্যবিত্তদেরও সেখানে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। মা-বোনের সঙ্গে যমুনায় কেনাকাটা করতে এসেছেন শারমিন সুলতানা তৃষা।

Advertisement

মা ও তিন বোনের জন্য মোট পাঁচটি শাড়ি কিনেছেন তিনি। কিনেছেন পরিবারের ছোটদের জন্য জামা-কাপড় ও জুতা। প্রিয়জনদের জন্য পছন্দের জিনিস বাছাইয়ে টানা ৩ ঘণ্টা মার্কেটে ছিলেন তিনি।

বের হওয়ার পথে যমুনা ফিউচার পার্কের গেটে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে বলেন, মনের মতো শপিং করেছি। এক ছাদের নিচে দেশের প্রথম সারির সব ব্র্যান্ডের সুবিশাল সব শোরুম রয়েছে এখানে। ঘুরে ঘুরে পছন্দের সব জিনিস কিনেছি।

যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতার জন্য রয়েছে ক্যাশব্যাক, স্পেশাল ডিসকাউন্ট, কুপনসহ বিভিন্ন ধরনের অফার। কেনাকাটার পাশাপাশি ক্রেতাদের মনোরঞ্জনে যমুনা ফিউচার পার্কের ইস্ট কোর্টে রয়েছে সার্কাস। ঈদের কেনাকাটা আকর্ষণীয় করে তুলতে ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ আয়োজন করেছে ‘ঈদ গ্র্যান্ড র‌্যাফল ড্র’।

এখানে এক হাজার টাকার কেনাকাটা করলেই পাবেন র‌্যাফল ড্র’র কুপন, যার মাধ্যমে পেতে পারেন গাড়ি, ডায়মন্ড জুয়েলারিসহ কোটি টাকার পুরস্কার।

Advertisement

শনিবার দুপুরে যমুনা ফিউচার পার্কে সরেজমিন ঘুরে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মার্কেটে এখন বেচা-বিক্রি হরদম চলছে, যা ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে।

উন্নত বিশ্বের নামি-দামি শপিংমলের আদলে গড়া এ মার্কেটে প্রশস্ত করিডোর আর সুপার কুল সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের কারণে হাজার হাজার ক্রেতার উপস্থিতিতেও এখানে শান্তিপূর্ণ ও আরামদায়ক পরিবেশ বিরাজ করে।

পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা অভ্যন্তরীণ সার্কুলার সড়ক ও ট্রাফিক ব্যবস্থার জন্য নেই কোনো গাড়ির জটও। এখানে ক্রেতা সাধারণের ব্যবহারের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত খালি জায়গা, রাখা হয়েছে ৫ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা।

৯০০ সিসি ক্যামেরা আর ২০০ সিকিউরিটির সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে সার্বক্ষণিক নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তা বলয়। এ সুন্দর ও আরামদায়ক পরিবেশ সম্পর্কে কেনাকাটা করতে আসা সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। এগিয়েছি আমরাও। ১০/১৫ বছর আগে যা ছিল আমাদের স্বপ্ন আজ আমাদের কাছে তা বাস্তব। সিঙ্গাপুর কিংবা থাইল্যান্ডের যেকোনো শপিংমলের সঙ্গে এ মলটির তুলনা চলে।

নাটোর থেকে ঈদ কেনাকাটা করতে আসা অবিভূত শামীম জাগো নিউজকে বলেন, এই প্রথম দুলাভাইয়ের সঙ্গে যমুনা ফিউচার পার্কে এসেছি। মার্কেটটাকে আমার বাংলাদেশ মনে হচ্ছে না। বিদেশ বিদেশ লাগছে।

যমুনা ফিউচার পার্কের বিক্রেতাদের তথ্য মতে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বারিধারা, খিলক্ষেত, বাড্ডা, শাহজাদপুর, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, মিরপুর, ডিওএইচএস ও গুলশান অভিজাত আবাসিক এলাকার ক্রেতারাই বেশি আসছেন এ শপিংমলে।

এবার ঢাকার বাইরে থেকেও অনেক ক্রেতা আসছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। যমুনা ফিউচার পার্কে ছুটে আসছেন গাজীপুর, সাভার, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ রাজধানীর আশপাশের এলাকার অনেক ক্রেতাও।

রমজানে উল্লেখযোগ্য ইফতারের ব্যবস্থা রয়েছে যমুনা ফিউচার পার্কে। নামি-দামি ব্র্যান্ডের অনেক কোম্পানি ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসিয়েছে এ শপিংমলে।

যমুনা ফিউচার পার্কে ঘুরে দেখা গেছে, ফিউচার পার্কের নিচতলায় রয়েছে আড়ং, নবরূপা, আর্টিস্টি, আর্টিজান, সেইলর, সাদাকালো, ইনফিনিটি, ক্যাটস আই, কে ক্রাফটসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাকের সমাহার।

প্রথম তলায় রয়েছে ইয়েলো, আর্টেস্টি, রিচম্যান, আর্টিজন, আর্টিস্টি কালেকশন, গ্রামীণ, ফিট এলিগেন্সসহ অনেক নামি-দামি ব্র্যান্ডের শোরুম।

দ্বিতীয় তলায় রয়েছে স্বর্ণালঙ্কার, ডায়মন্ড জুয়েলারি, শাড়ি ও ঘড়ি। মার্কেটের তৃতীয় তলায় রয়েছে বাটা, গ্যালারি এপেক্স, জিলস, লোটোসহ সব ধরনের দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের জুতার এক বিশাল সমাহার।

আরএম/এমএমএ/আরআইপি