আজ রমজানের শেষ দশকের প্রথম দিন; ২১ রমজান। কল্যাণ ও বরকতের মাস পবিত্র রমজানে ইসলামের ইতিহাসে যুবকদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু খেলাফতের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ৪০ হিজরির ২১ রমজান শাহাদাত বরণ করেন। তাছাড়া এ দিনে অনেক নবি রাসুলও ইন্তেকাল করেছেন আবার অনেকে জন্ম গ্রহণ করেছেন।
Advertisement
ঐতিহাসিক সত্য হলো- হজরত মুসা আলাইহিস সালাম এ দিনে জন্ম লাভ করেন আর এ দিনেই হজরত ঈসা আলাইহিস সালামকে আকাশে তুলে নেন।
হজরত হাসান ইবনে আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর বাবা হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘তিনি এমন রাতে শাহাদাত বরণ করছেন; যে রাতে কুরআনুল কারিম নাজিল হয়েছে। হজরত ঈসা আলাইহি সালামকে আসমানে তুলে নেয়া হয়েছে এবং হজরত মুসা আলাইহিস সালামও ২১ রমজান মারা যান।
Advertisement
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহ আনহু ইসলামের দাওয়াত গ্রহণের দিক থেকে হজরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহার পরেই ইসলাম গ্রহণ করেন।
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচাত ভাই। তাঁর পিতা আবু তালেবের তত্ত্বাবধানেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লালিত পালিত হন।
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুর পিতা আবু তালেব; প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পিতা আবদুল্লাহ এবং যুবাইর এ তিনজন ছিলেন সহোদর ভাই।
যখন তিনি কিশোর তখন বনু হাশেম গোত্রকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার সময় প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে থাকার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন।
Advertisement
হিজরতের রাতে মক্কায় চরম বিপদের সময় বিশ্বনবি হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকেই তাঁর বিছানায় শুইয়ে রেখে গিয়েছিলেন। যাতে বিশ্বনবির নিকট গচ্ছিত থাকা মানুষের আমানত তিনি যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিতে পারেন।
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু প্রিয়নবির জীবদ্দশায় সংঘটিত প্রত্যেকটি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি বীরত্ব ও সাহসিকতার এমন এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, যা আজো ইসলামের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সবচেয়ে আদরের সন্তান হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে তাঁর সঙ্গে বিবাহ দেন।
তিনি ছিলেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় অপ্রতিদ্বন্দ্বি। তাঁর সম্পর্কে বিশ্বনবির বক্তব্য ছিল- ‘আমি জ্ঞানে শহর আর আলি হলো সে শহরের দরজা।’
তাইতো হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় বাইয়াতে রিদওয়ানের চুক্তিপত্রের শর্তগুলো লেখে কাতেবের ভূমিকা পালন করেন।
তিনি নবম হিজরিতে হজরত আবু বকরের নেতৃত্বে হজ পালনের সময় প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশে সুরা তাওবার ১ থেকে ৩৭ আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করেন। আর এ আয়াতগুলোতে ছিল মুক্তির ঘোষণা এবং কাফের মুশরিকদের হজ্ব সম্পাদনে অনুমতি দানের অস্বীকৃতি।
ইসলামের ইতিহাসে ৪০ হিজরির ২১ রমজান এক ঐতিহাসিক দিন। এ দিনেই যুবকদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু ইবনে মুলযান-এর তরবারির আঘাতে শাহাদাত বরণ করেন।
এমএমএস/জেআইএম