জাতীয়

ফল প্রদর্শনীতে বাহারি ফলের পসরা

`স্বাস্থ্য, পুষ্টি, অর্থ চাই, দেশি ফলের গাছ লাগাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রতিবছরের মতো এবারও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার (১৬ জুন) রাজধানীর ফার্মগেটে আ কা মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটোরিয়াম চত্বরে শুরু হওয়া ৩ দিনব্যাপী জাতীয় ফল প্রদর্শনী চলবে রোববার (১৭ জুন) পর্যন্ত।

জাতীয় ফল প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমাদের আগে যে খাদ্যের অভাব ছিল, তা এখন আর নেই। আধুনিক প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে আমরা এ সফলতা অর্জন করেছি। আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে, কৃষি জমির পরিমাণ কমেছে। তারপরও বাংলাদেশ কৃষি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।

তিনি বলেন, আগে ফলসহ বিভিন্ন ফসলের স্টক বাইরে থেকে আনা হতো, এখন আমরা নিজেরাই তৈরি করছি। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের গবেষণা ও আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণের কারণে।

Advertisement

খাদ্যে পুষ্টির বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়ার বিষয় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে এখনও যথেষ্ট পুষ্টির অভাব রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে। আমাদের প্রচলিত ফলের উন্নয়নের মাধ্যমে ফলের সরবরাহ সারা বছর নিশ্চিতকরণে কৃষির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা আম উৎপাদনে সপ্তম ও পেয়ারা উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম স্থানে আছি। অন্যান্য ফলের ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষ করে লিচুর ক্ষেত্রে। লিচুর দীর্ঘ জীবনকালের জাত উদ্ভাবনের বিষয়ে গবেষকদের আহ্বান জানান তিনি।

কাঁঠালের বিষয় উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কাঁঠালকে জাতীয় ফল হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। কাঁঠাল এমন একটি ফল, যার কোনো অংশই ফেলানো যায় না। কাঁচা কাঁঠালকে ভেজিটেবল মিট হিসেবে ব্যবহার/গ্রহণ ও বিদেশে রফতানির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন।

এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে আ কা মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটোরিয়াম চত্বর পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালি শেষে প্রধান অতিথি ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী ২০১৭ এর উদ্বোধন করেন এবং স্টল পরিদর্শন করেন।

Advertisement

ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী ২০১৭ উপলক্ষে সকাল সোয়া ১০টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অডিটেরিয়াম সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

কৃষি সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ‘খাদ্য, পুষ্টি ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় দেশি ফলের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম মোফাজ্জল হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. মোশারফ হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. গোলাম মারুফ।

আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মো. কুদরত-ই-গনী মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন।

মেলায় অঞ্চলভেদে বিভিন্ন ফলের পৃথক স্টল রয়েছে৷ উত্তরাঞ্চলের ফল, ভাওয়াল ও মধুপুর গড় অঞ্চলের ফল, উপকূলীয় অঞ্চলের ফল, পাহাড়ি অঞ্চলের ফল ইত্যাদি ভাগে ফলের পসরা সাজিয়েছে মেলায় আগত স্টগুলো।

মেলায় মোট স্টলের সংখ্যা ৭৫টি। সরকারি স্টলের মধ্যে রয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, কৃষি তথ্য সার্ভিস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, কৃষি বিপনন অধিদফতর ও হর্টেক্স ফাউন্ডেশন।

এছাড়াও আম উৎপাদক ও বিপননকারী বেসরকারি সংস্থার ৪৯টি স্টল বসেছে প্রদর্শনীতে। মেলায় আমের ৬০টির অধিক প্রজাতিসহ প্রায় ১৫২ প্রজাতির ফলের একাধিক জাত প্রদর্শিত হচ্ছে।

মেলা প্রতিদিন প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

এফএইচএস/এমএমএ/পিআর