বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) উপ-পরিচালক সিতাংশু শেখর বিশ্বাসের স্ত্রী কলেজ শিক্ষিকা কৃষ্ণা কাবেরী হত্যা মামলার একমাত্র আসামি জহিরুল ইসলাম পলাশকে দেড় মাসেও আটক করতে পারেনি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তদন্তে অগ্রগতি আনতে মামলা ডিবিতে স্থানান্তরিত করা হলেও গত দেড় মাসে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন জহিরুল। নিহত কৃষ্ণা কাবেরীর ইকবাল রোডের বাসার তত্ত্বাবধায়ক আবদুর রহিম জানান, ৩০ মার্চ কাবেরী হত্যার পর তার পরিবারের কেউ এ বাসায় আসেননি। তবে বিআরটিএ কর্মকর্তা সীতাংশু শেখর ঘটনার ১০ দিন পর বাসায় এসে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নিয়ে গেছেন।তিনি আরো বলেন, বাসাটি অন্য কাউকে ভাড়া না দেওয়ার জন্য ডিবি পুলিশ অনুরোধ করায় বাসাটি ভাড়া দেওয়া হয়নি।মামলার তদন্তকারী সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যা মামলার প্রধান আসামি জহিরুল ইসলাম ‘হাজী আহম্মেদ ব্রাদাস সিকিউরিটি’র ব্যবস্থাপক। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। আমরা তাকে ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।জহিরুলের সঙ্গে নিহতের স্বামী সীতাংশু শেখর বিশ্বাসের বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন ছিল। জহিরুল গ্রেফতার হলেই মামলার সুরাহা হবে বলেও জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।পুলিশ ও স্বজনরা জানান, গত ৩১ মার্চ (সোমবার) রাতে পূর্ব পরিচিত জহিরুল বিআরটিএর উপ-পরিচালক সিতাংশু শেখরের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর কথা বলে তার ইকবাল রোডের ৩/১২ নম্বর বাসায় এসে সীতাংশুকে জুসের মধ্যে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে। এ সময় কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস বাঁধা দিলে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গান পাউডার দিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান জহিরুল। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কৃষ্ণা কাবেরী। এ ঘটনায় নিহতের দুই মেয়ে শ্রুতি বিশ্বাস ও অত্রি বিশ্বাস গুরুতর আহত হয়।এ ঘটনায় সিতাংশুর বড় ভাই শুধাংশু শেখর বিশ্বাস বাদী হয়ে হাজী আহম্মেদ ব্রাদাস সিকিউরিটির ব্যবস্থাপক জহিরুল ইসলামকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মামলার প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, কাবেরী হত্যার পরপরই ডিবির কাছে মামলার তদন্তের দায়িত্ব আসে। হত্যার রহস্য উদঘাটন কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন হত্যাকারীকে গ্রেফতার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, একমাত্র আসামি শেয়ার ব্যবসায়ী জহিরুলকে গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে কিন্তু তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। জহিরুলকে গ্রেফতার করার জন্য ডিবির একটি দল ঢাকার বাইরে আছে। গত এক সপ্তাহ ধরে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলেও দাবি করেন তিনি।স্ত্রীর হত্যাকারী জহিুরুল গ্রেফতার না হওয়ায় সীতাংশু শেখর বিশ্বাস ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনার প্রায় দেড় মাস হতে চললো। এদিকে জহিরুলের ফোন নম্বর খোলা থাকে। বিষয়টি ডিবি পুলিশকে জানানো হয়েছে। এরপরও জহিরুল গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।জেইউ/এসকেডি/বিএ/পিআর
Advertisement