কূটনীতিক গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে বলে দেশটির প্রতি অভিযোগ এনেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার মধ্যরাতের পরে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এতে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রেফতার ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়।
Advertisement
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এক বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ একজন গৃহকর্মীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কূটনীতিককে গ্রেফতারের ঘটনাকে সুস্পষ্টভাবে ভিয়েনা কনভেনশনের লঙ্ঘন।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘এই গ্রেফতার ভিয়েনা কনভেনশনের কনস্যুলার রিলেশন ১৯৬৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন- সেটা বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’
সোমবার (১২ জুন) নিউইয়র্কে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেল মোহাম্মাদ শাহেদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে তিন বছরের বেশি সময় ধরে গ্রহকর্মীর ওপর সহিংস নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে বিনা বেতনে কাজ করতে বাধ্য করানোর অভিযোগ আনা হয়।
Advertisement
শাহেদুল ইসলামকে কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে রাখা হয়েছে। পরে নিউইয়র্কের কুইন্স কাউন্টির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ড্যানিয়েল লুইসের আদালতে তাকে হাজির করা হলে তিনি শর্ত সাপেক্ষে জামিন পান।
ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি রিচার্ড এ ব্রাউন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একজন কূটনীতিক তার বাড়িতে আরেকজনকে কাজে বাধ্য করতে শারীরিক জোর খাটিয়েছেন এবং হুমকি দিয়েছেন।’
‘প্রথমদিন থেকেই ওই কর্মীকে কাজে আটকে রাখার জন্য তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। তাকে বেতন দিতে অস্বীকার করা হয় এবং অন্য দেশে থাকা তার পরিবারকে বিপদে ফেলার ভয়ভীতি দেখানো হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে নিশ্চিতভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি পেতে হবে’ বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের শেষ দিকে মোহাম্মদ আমিনকে গৃহকর্মী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান শাহেদুল ইসলাম। তার বাসা থেকে ২০১৬ সালের মে মাসে হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যান আমিন।
Advertisement
বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বলেছে, ‘এই গৃহকর্মী তের মাস আগে (১৭ মে ২০১৬) শাহেদুল ইসলামের বাসা থেকে নিখোঁজ হন। ঘটনাটি ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের কাছে নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল ও ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে যথাক্রমে ২০১৬ সালের মে মাসের ১৮ ও ১৯ তারিখ জানানো হয়।’
এতে আরও বলা হয়, কিন্তু শাহেদুল ইসলামের গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত ওই বিষয়ে কোনো অগ্রগতিই আমরা জানতে পারিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ইস্যুটির সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগে করছে। আমরা আশা করি আমাদের উদ্বেগ সঠিকভাবে সমাধান করা হবে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং সহযোগিতা প্রসারিত করার কথাও জানিয়েছে বিবৃতিতে।
জেপি/বিএ