প্রবল বর্ষণে পাহাড়ধসে রাঙামাটির মানিকছড়িতে সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তাসহ চার সদস্য নিহত হয়েছেন। এখনও নিখোঁজ আছেন এক সদস্য। এছাড়া আহত হয়েছেন ১০ সদস্য।
Advertisement
আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
জেলার মানিকছড়িতে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি অপসারণের সময় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। জাগো নিউজের চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অতিবৃষ্টিতে এ তিন জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে রাঙামাটিতে ৩৭ জন, বান্দরবানে ৮ এবং চট্টগ্রামে ১২ জন মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে পাহাড়ধসে চার সেনাসহ মোট ৩৯ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
Advertisement
জাগো নিউজের রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসে ৩৭ জন মারা গেছেন। রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার, ভেদভেদী, শিমুলতলী, মোনঘর, রাঙামাটি ও মানিকছড়িসহ বিভিন্ন স্থানে ২০ জন, কাউখালীর বেতবুনিয়ায় চারজন, ঘিলাছড়িতে তিনজন, কাশখালীতে তিনজন এবং কাপ্তাই রাইখালীর কারিগর পাড়ায় চারজন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মানিকছড়িতে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটি অপসারণের সময় ছয় সেনা সদস্য নিহত হন। তারা হলেন- মেজর মাহফুজ, ক্যাপ্টেন তানভীর আহমেদ, সিপাহী আজিজ, শাহীন, ল্যান্স কর্পোরেল আজিজ ও সিপাহী মামুন।
এছাড়া বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাঙামাটি ও ঢাকার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সকাল ১১টার দিকে হতাহত সেনা সদস্যরা মানিকছড়িতে রাস্তার ওপর ধসে পড়া মাটি অপসারণের কাজ করছিলেন। এ সময় আকস্মিক পাশের একটি উঁচু পাহাড় ধসে পড়ে। মাটিচাপা পড়েন তারা।
নিহতদের মধ্যে যাদের মরদেহ রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে তারা হলেন- রুমা আক্তার (২৫), নুর আক্তার (৩), হাজেরা (৪০), সোনালি চাকমা (৩০), এক বছর বয়সী শিশু অমিয় কান্তি চাকমা, আইয়ুশ মল্লিক (২), চুমকি মল্লিক (২), লিটন মল্লিক (২৮), অজ্ঞাত (২২), মিন্টু ত্রিপুরা (৪৫), আবদুল আজিজ (৫৫), অজ্ঞাত (৩২), মিলি চাকমা (৫৫), ফেন্সি চাকমা (৪)।
Advertisement
কাউখালীতে নিহতদের মধ্যে ফাতেমা বেগম (৬০), মনির হোসেন (২৫), মো. ইসহাক (৩০), দবির হোসেন (৮৪), খোদেজা বেগম (৬৫), অজিদা খাতুন (৬৫), মংকাচিং মারমা (৫২), আশেমা মারমা (৩৭), শ্যামা মারমা (১২), ক্যাচাচিং মারমা (৭), কুলসুমা বেগম (৬০), বৈশাখী চাকমা (১০) ও লায়লা বেগমের (২৮) নাম পাওয়া গেছে।কাপ্তাই রাইখালীর কারিগর পাড়ায় নিহত চারজনের নাম তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। এর আগের দিন সোমবার রাঙামাটি শহরের পুলিশ লাইন এলাকায় এক শিশু এবং কাপ্তাইয়ের নতুন বাজারে এক শিশু পাহাড়ের মাটিচাপায় মারা যায়।
জেলা প্রশাসন থেকে মোট ৩৫ জনের নিহতের তালিকা পাওয়া গেছে বলে জানান ডেপুটি কালেক্টর তাপস দাশ।
জেপি/এমএআর/আরআইপি