দেশজুড়ে

রাস্তায় ওপর চলছে নৌকা!

সাগরে গভীর নিম্নচাপের ফলে রোববার (১১ জুন) দিবাগত রাত থেকে টানা বর্ষণে ফের তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর নিম্নাঞ্চল।

Advertisement

জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে আগ্রাবাদ, হালিশহর, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, ছোটপুল, বহদ্দারহাট, চকবাজা, শুল্কবহর, বাকলিয়া এলাকায়। এতে নগর জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।

জলাবদ্ধতায় এক্সেস রোডে কার্যত যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রিকশা ও ভ্যানই ছিল এলাকাবাসীর ভরসা। তবে রিকশা ও ভ্যানের পাশাপাশি সড়কের ওপর দেখা গেছে বেশ কয়েকটি নৌকা-সাম্পানের চলাচলও।

সোমবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। মৌসুমি নিম্নচাপের কারণে সমুদ্রবন্দরগুলোতে ইতোমধ্যে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

Advertisement

সাগরে মৌসুমি নিম্নচাপের প্রভাবে রোববার বিকেল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। চট্টগ্রাম মহানগরীতেও রাত থেকে ঝড়োহাওয়ার সঙ্গে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এতে নগরীর নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা সোমবার ভোরের দিকেই তলিয়ে যায়।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমেদ বলেন, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বাতাসের পাশাপাশি বৃষ্টিপাতও অব্যাহত থাকবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জিইসি মোড়, ২ নম্বর গেট এলাকার পানি সকালে অনেকটা নামলেও আগ্রাবাদ, বাদুরতলা, চকবাজারসহ নিচু এলাকায় পানি থেকে যায়। পানিতে বিভিন্ন সড়ক, গলিসহ পাড়ামহল্লার বিভিন্ন ভবনের নিচতলার বাসা ডুবে যায়।

এতে চাকরিজীবী ও সাধারণ মানুষ সকাল থেকেই চরম ভোগান্তিতে পড়ে। বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল কমে যায়। সড়কে জমে থাকা পানিতে বাস-অটোরিকশাসহ যানবাহন আটকে গিয়ে ভোগান্তি আরও চরম আকার ধারণ করে।

Advertisement

আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা ইয়াছিন হীরা বলেন, বৃষ্টির পানিতে নিচতলা ডুবে গেছে। কয়েকদিন আগেও বৃষ্টিতে পানিবন্দি ছিলাম। আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা আসহাব উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতে পানি ওঠে এবং কয়েকদিন ধরে পানি জমে থাকা সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে।

এদিকে, দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৭৭ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস। মৌসুমি নিম্নচাপের ফলে সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেতের কারণে সাগর উত্তাল ও জোয়ার আসায় এবং মহেশখালের অস্থায়ী বাঁধের কারণে অন্তত পাঁচ লাখ লোক জলাবদ্ধতার শিকার হন।

সোমবার দুপুরে কোমর পানিতে তলিয়ে যাওয়া নগরীর আগ্রাবাদ এক্সেস রোড পরিদর্শন করেছে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে মহেশখাল খনন, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, খালের দুপাড়ে রাস্তা নির্মাণ, এক্সেস রোড উঁচু করে পরিকল্পিত ড্রেনেজ সিস্টেম চালু করা হবে।

আগামী বছর বর্ষা মৌসুমের আগে এসব কাজ সম্পন্ন করা গেলে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ ও দুর্গতি থেকে নগরবাসী মুক্তি পাবে বলে জানান তিনি।

এএম/জেআইএম