রাজশাহীর তানোরে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। রোববার গভীর রাতে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের ডাঙাপাড়া গ্রামের ওই বাড়িটিতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ আটক করা হয় সন্দেহভাজন তিন জঙ্গিকে।
Advertisement
এরা হলেন, ইব্রাহীম হোসেন (২৬), ইসরাফিল হোসেন (২৪) ও রবিউল ইসলাম (২৫)। এদের মধ্যে ইব্রাহীম ও ইসরাফিল দুই সহদর এবং রবিউল তাদের ছোট বোন হাওয়া খাতুনের (২১) স্বামী। ইব্রাহীমের বাবা রমজান আলী উপজেলার গৌরাঙ্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
পুলিশের ভাষ্য, ঘিরে রাখা বাড়িটি থেকে দুটি সুইসাইডাল ভেস্ট, একটি ৭.৬২ মডেলের এমএম বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী বলেন, রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও রাজশাহী জেলা পুলিশ ইব্রাহীমের বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এসময় ওই বাড়ি থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে বলা হয়। পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ওই বাড়ি থেকে তিনজন বের হন। পরে বাড়ির ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে এসব অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।
Advertisement
সুমিত চৌধুরী আরও বলেন, ওই বাড়িতে একটি শক্তিশালি বোমাসহ কিছু বিস্ফোরক দ্রব্য রয়েছে। বাড়িটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। ঢাকায় বোমা নিস্ক্রিয় দলকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তারা এলেইে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী জানান, আটক তিনজনই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। বগুড়া জেলা পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটকদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এনিয়ে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে সোমবার সকালে ওই বাড়ি থেকে চার শিশু ও তিন নারীসহ নয়জনকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এরা হলেন, জঙ্গি ইব্রাহীম ও ইসরাফিলের বাবা রমজান আলী, মা আয়েশা বেগম, মেয়ে হাওয়া খাতুন, ইব্রাহীমের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন, ইসরাফিলের স্ত্রী হারেছা খাতুন। আর শিশুদের মধ্যে হাওয়া খাতুনের এক ও মর্জিনা খাতুনের তিন শিশু কন্যা। যাদের বয়স এক মাস থেকে নয় বছর পর্যন্ত।
সবাইকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে সকালে পুলিশ দ্বিতীয় দফায় ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায়। তবে সেখানে আর কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
Advertisement
অপরদিকে পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ১০/১২ বছর ধরে রমজান আলীর পরিবারের সদস্যরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদের নামাজ পড়ত। চলতি রমজান মাসেও তারা সৌদি আবরের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে থেকে রোজা রাখা শুরু করে। গত বছর রমজান আলী ও তার স্ত্রী আয়শা বেগম হজ করেছেন।
মঞ্জু বলেন, ইব্রাহীম ও ইসরাফিল মাদরাসায় লেখাপড়া করেছেন। বর্তমানে ইব্রাহীম বাড়িতে সার কীটনাশকের ব্যবসা করেন। আর ইসরাফিল পেশায় কৃষক। তাদের ভগ্নিপতি রবিউলের বাড়ি পাশের গ্রামের চকপাড়ায়। পেশায় তিনি কাঠমিস্ত্রি। বিয়ের পর থেকে রবিউল শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/পিআর