দেশের হাওরাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের নেয়া ‘হিলিপ’ (হাওর অঞ্চলের অবকাঠমো ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প) এর একটি প্রতিনিধি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেন। গত বুধবার প্রকল্পের অর্থ যোগানদাতা বিদেশি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যাগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ) এর প্রতিনিধি দলসহ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ১২/১৪ জনের একটি দল আসেন কাজ পরিদর্শনে। তবে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে বের হওয়ার আগেই এলজিইডি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্মকর্তারা তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য নানা প্রচেষ্টা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সন্তুষ্ট করার জন্য গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে গভীররাত পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলজিইডির মিলনায়তনে চলে গান-বাজনার আসর। এর সঙ্গে ছিল বিশেষ আপ্যায়নেরও ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে এলজিইডির ব্রাহ্মণবাড়িয়া নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।জানা যায়, গত ২০১৩ সাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় হিলিপ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছর জেলার নবীনগর পূর্ব ইউনিয়নের বগডহর গ্রামে ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে এই প্রকল্পের আওতায় সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে। তবে এই কাজ নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্প এলাকাধীন দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিজেরা কমিটি করে এই কাজ করার কথা। সেজন্যে কাজ শুরুর আগে নির্মাণ সামগ্রী ক্রয়ের জন্য মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৪০ ভাগ টাকা অগ্রিম প্রদান করার নিয়ম রয়েছে। আর তাই হিলিপের কাজ ঠিকাদারদের কাছে লোভনীয় কাজে পরিণত হয়েছে। তবে স্থানীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বদলে এলজিইডি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকার রফাদফায় স্থানীয় ঠিকাদাররা এই কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি প্রকল্পের শর্ত লঙ্ঘন ও নিম্নমানের কাজ করে প্রকল্পের জন্য বিদেশি দাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ হিসেবে নেয়া অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।উল্লেখ্য, হিলিপ প্রকল্পে সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে গত বুধবার জাগোনিউজ২৪.কম এ ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুর্নীতির আরেক নাম হিলিপ প্রকল্প’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।আজিজুল আলম সঞ্চয়/এমজেড/এমএস
Advertisement