অর্থনীতি

আবগারী শুল্ক বাড়লে সৃষ্টি হবে ‘ছায়া অর্থনীতি’

ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে লেনদেন ও স্থায়ী আমানতের উপর আবগারী শুল্ক হার বৃদ্ধি ক্ষুদ্র আমানতকারীদের জন্য হতাশার। এ ছাড়া এ খাতে আমানতের উপর অতি স্বল্প সুদহার এবং বিপরীতে উচ্চ হারে উৎস কর্তন ও আবগারী শুল্কের বর্ধিত হার ব্যাংক ভিত্তিক সঞ্চয় ও লেনদেনে নিরুৎসাহী করে তুলবে। যার ফলে বিকল্প মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয় প্রবৃত্তি বাড়বে এবং সৃষ্টি হবে ‘ছায়া অর্থনীতি’।

Advertisement

সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি কর্তৃক আয়োজিত বাজেট পরবর্তী আলোচনা সভায় গবেষকরা এসব কথা বলেছেন। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য দফতর সংলগ্ন পুরাতন সিনেট মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টারের পরিচালক ড. এম আবু ইউসুপ। এ ছাড়া সেন্টারের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারীদের বিশেষ সুবিধা দেয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তারা বলেন, নারীদের জন্য কোনো কর ছাড় নেই, কর মুক্ত আয় সীমার বৃদ্ধিও ঘটেনি, সেই সঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কোনো বিশেষ পরিকল্পনা রাখা হয়নি। নারীর উন্নয়নে পৃথক নারী উন্নয়ন ব্যাংক চালু করা, নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত ভ্যাট অব্যাহতি প্রাপ্তির সুযোগ, নারীদের ব্যাংক হিসাবে বিশেষ শুল্ক রেয়াত ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সুদের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭-৮ করা দরকার।

Advertisement

বাজেট বিষয়ে সাংসদদের প্রশিক্ষণ জরুরি উল্লেখ করে তারা বলেন, যাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয় সেই সংসদ সদস্যদের অনেকেরই বাজেট বিষয়ে স্পষ্ট ও ভালো জ্ঞান নেই। বাজেট বিষয়ে তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সারাবছর পর্যায়ক্রমে তারা বাজেটের উপর আলোচনা করবে। তা না হলে বাজেটের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়।

জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দকে অন্যান্য খাত থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্রভাবে ঘোষণা দেয়ার আহ্বান জানান তারা। বলেন, প্রতিবছরই শিক্ষা খাতের বাজেট দেয়া হয়, তবে ধর্ম কল্যাণ, পরিবার কল্যাণ বা তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি খাতকে সংযুক্ত রাখা হয়। এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। শিক্ষার সঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয় জড়িয়ে দেয়ার জন্য এ খাতে বাজেটের পরিমাণ অস্পষ্ট রয়ে যায়। এবার দেখা যাচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পকেও শিক্ষা বাজেটের মধ্যে ধরা হয়েছে।

উচ্চশিক্ষা খাতে বাজেটের পরিমাণ স্বল্প উল্লেখ করে তারা আরও বলেন, কোন বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা খাতে কী পরিমাণ অর্থায়ন করে তা তার উৎকর্ষের পরিচয় বহন করে। বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের যে র্যাংকিং করা হয় সেখানে সবেচেয়ে বড় বিবেচ্য বিষয় থাকে গবেষণা, সেমিনার, প্রকাশনা ও শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের জন্য এ সকল খাতে বরাদ্দ অত্যন্ত স্বল্প।

এমএইচ/আরএস/পিআর

Advertisement