জাতীয়

প্রযুক্তির অভাবে ধরাছোয়ার বাইরে হত্যাকারীরা

রাজধানীর গোপিবাগের ৬ খুন, ইসলামি নেতা ফারুকী, ব্লগার অভিজিৎসহ গত দেড় বছরে রাজধানীতে ঘটেছে বেশ কয়েকটি আলোচিত হত্যাকাণ্ড। তবে এ পর্যন্ত এগুলোর সুরাহা দূরের কথা, হত্যাকারীদের সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এজন্য অবশ্য উন্নত প্রযুক্তির অভাবকে দায়ী করলেন পুলিশের তদন্ত বিভাগের সদস্যরা।২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট রাতে নিজ বাসায় খুন হন ইসলামি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী। হত্যাকাণ্ডের ৯ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো আসামিদের সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সংস্থা কাজ করলেও লক্ষণীয় কোন অগ্রগতি নেই মামলাটিতে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, আসামিরা সে সময় ইন্টারনেট এপ্লিকেশন ভাইবারে কথা বলেছিল। তবে ভাইবারে কথোপকথন ট্র্যাকিং কিংবা অবস্থান ট্র্যাক করার কোন প্রযুক্তি তাদের নেই।ফারুকীর হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৭ হাজার মোবাইল ফোন নম্বর ট্র্যাক করা হয়ছে। একমাত্র ভাইবারে যোগাযোগের কারণে পুলিশ তাদের গতিবিধি অনুসরণ করতে পারছে না বলে জানান মামলা তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পশ্চিম টিমের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) জুলহাস উদ্দিন আকন্দ বলেন, মামলার তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোন হত্যাকারীকে এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছিলেন লুৎফর রহমান ফারুক নামে কথিত এক পীর এবং তার ৫ মুরিদ। দেড় বছরে এই হত্যাকাণ্ডের বিন্দুমাত্র ক্লু বের করতে পারেনি পুলিশ।এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিদ্যালয়ের টিএসসিতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। হত্যার পর নিজেদের এক টুইট বার্তায় হত্যার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা। তবে এখনও তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সংস্থা। পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ফোন ট্র্যাকিং, ইউটিউব, ফেসবুক আর টুইটারের বার্তা নিয়ে তদন্তকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে সামাজিক মাধ্যমের পোস্টগুলোর অবস্থান নির্ণয়ের প্রযুক্তি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী কোনো বাহিনীর কাছে নেই।এদিকে তদন্তের ‘ধীরগতি’ দেখে হতাশ নিহতের পরিবারের সদস্যরা। নুরুল ইসলাম ফারুকীর বড় ছেলে রেজা ফারুকী বলেন, বিভিন্ন অযুহাতে পেছাচ্ছে মামলার তদন্ত কাজ। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয় না, যোগাযোগ করা হয় না। কিছু জিজ্ঞেস করলে বলে, তদন্ত চলছে ‘নিরবে’।তদন্তের অগ্রগতি না হওয়ার বিষয়ে অভিজিৎ রায়ের বাবা প্রফেসর ড. অজয় রায় জাগো নিউজকে বলেন, আনসারুল্লাহ-আল কায়েদাসহ নানা অযুহাতে আড়ালে থেকে যাচ্ছে আসল খুনীরা। এসব ভাউতাবাজি।তবে নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি লুৎফর রহমান ফারুকের পরিবারের কেউই।এআর/আরএস/পিআর

Advertisement