অর্থনীতি

সরকারি ১১ প্রতিষ্ঠানের ভর্তুকি বেড়েছে ৪৭৯ কোটি টাকা

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকারি ১১ প্রতিষ্ঠানে ভর্তুকির পরিমাণ দুই হাজার ১৮৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যা গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের চেয়ে ৪৭৯ কোটি টাকা বেশি।

Advertisement

সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দেয়া হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। যার পরিমাণ এক হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ৮৯১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে এ বছর ভর্তুকি দেয়া হয়েছে ৪১১ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি), অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিএসসিআইসি), বাংলাদেশ রেশম বোর্ড (বিএসবি), রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), পানি উন্নয়ন বোর্ড (বিডব্লিউডিবি), জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (এনএইচএ), বাংলাদেশ রেশম  গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বিএসআরটিআই)- এই ১১ প্রতিষ্ঠানকে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভর্তুকি হিসেবে এক হাজার ৭০৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা প্রদান করে সরকার।

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৮৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনকে ৩৭৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনকে ১৬৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে।

Advertisement

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে ভর্তুকির পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১২৯১ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৩২৯ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৭০৬ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়। তবে নিয়মিত ভর্তুকি  দেয়া হলেও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লোকসানও বাড়ছে।

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত সর্বশেষ হিসাবে সর্বোচ্চ লোকসানে আছে বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ড। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম থাকায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছে। যদিও আগের বছরের তুলনায় তাদের মুনাফা কমেছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তুকির বিষয়ে জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকারি মালিকানার নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বছরের পর বছর বস্ত্রকল, পাটকলগুলো ধরে না রেখে ছেড়ে দেয়া উচিত ছিল। সরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ করার অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সেক্ষেত্রে জমিগুলো অর্থনৈতিক অঞ্চল করে অথবা নতুন করে ব্যবহার উপযোগী করে অন্য খাতে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। তাহলে বছরের পর বছর বন্ধ কারখানাগুলোর পেছনে ভর্তুকি দিতে হতো না। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বাড়িয়ে লোকসান কমিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

Advertisement

এমইউএইচ/এমএআর/আরআইপি