দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মঙ্গলবার বাজারে এসেছে অরুন্ধতী রায়ের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’। তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য গড অব স্মল থিংস’-এর ২০ বছর পর দ্বিতীয় উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছে। ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’ উপন্যাস লিখতে প্রায় দশ বছর সময় লেগেছে।
Advertisement
‘দ্য গড অব স্মল থিংস’-এর জন্য অরুন্ধতী বুকার পুরস্কার (১০৯৭) লাভ এবং বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পেয়েছেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় নারী লেখক যিনি এই মর্যদাপূর্ণ পুরস্কার পান। খবর এএফপির।
অরুন্ধতী প্রথম উপন্যাসে ভারতের জাতপাত, শ্রেণি ও ধর্মের গণ্ডি ছাড়িয়ে মানবিক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি উপন্যাসটিতে ভারতের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেন। বইটি প্রকাশের পর অরুন্ধতী রাতারাতি সাহিত্য জগতের তারকা হয়ে যান। বইটির ৮০ লাখ কপি বিক্রি হয়।
প্রথম উপন্যাস প্রকাশের পর তিনি দীর্ঘদিন ধরে নন-ফিকশন লেখালিখি করেন। এসময় তিনি দারিদ্য এবং কাশ্মির সংকটের মতো ইস্যুগুলো নিয়ে আর্টিকেল লিখেন। তার লেখনীর অধিকাংশই ভারতের শাসকগোষ্ঠীর কঠোর সমালোচনামূলক। এ কারণে তিনি তাদের রোষানলেও পড়েন। এইসব ঘটনার প্রভাবও পড়েছে তার নতুন উপন্যাস ‘দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস’ এ।
Advertisement
প্রকাশনী সংস্থা পেঙ্গুইনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘উপন্যাসটি পাঠকদের পুরোনো দিল্লির পিছিয়ে পড়া ও দলিত সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকাগুলো থেকে কাশ্মির উপত্যকা এবং মধ্যভারতের মাওবাদীদের কাছে নিয়ে যাবে। ওই অঞ্চলের জঙ্গলে তারা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্রোহ তৎপরতা চালাচ্ছে।’
অরুন্ধতী তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আদালত অবমাননার দায়ে কিছু সময়ে কারাগারে ছিলেন। ২০১০ সালে গোলযোগপূর্ণ কাশ্মির অঞ্চলে ভারত শাসনের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করে একটি লেখা প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। এখনও তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা চলছে।
তিনি বিভিন্ন লেখনীতে তুলে ধরেন যে ‘ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে মুষ্টিমেয় কিছু লোক আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। এরা দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শোষণ করে, ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাদের অর্থের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।’
তিনি তার গবেষণা চালাতে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গেও সময় কাটিয়েছেন। মাওবাদী বিদ্রোহীরা ভারতের মধ্যাঞ্চলের সম্পদ সমৃদ্ধ জঙ্গলে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
Advertisement
২০০২ সালে গুজরাটে মুসলিমবিরোধী ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার ঘটনায় তিনি একবার মোদিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। ওই ঘটনার সময় মোদি রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে গুজরাটে ভয়াবহ দাঙ্গার সময় নির্লিপ্ত থাকেন।
ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেটি) তীব্র নিন্দা করে অরুন্ধতী বিভিন্ন লেখা লিখেছেন।
এএসএস/জেডএ/পিআর