আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার খেলা শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ইংল্যান্ডের স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১৮ মিনিটে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
Advertisement
অস্ট্রেলিয়া কম করে ২০ ওভারও যদি খেলতে পারতো, তাহলেই বৃষ্টি আইনে একটা ফল ঘোষণা করা যেতো; কিন্তু বৃষ্টি আসার আগে অসিরা খেলতে পেরেছিল মাত্র ১৬ ওভার। যে কারণে, ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হন ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড।
ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিতে হলো দুদলকে। প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের পয়েন্ট ১। অস্ট্রেলিয়ার টানা দুটি ম্যাচই পরিত্যক্ত হলো। ফলে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াল ২। ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় ১ পয়েন্ট পাওয়ার কারণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টিকে রইল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে সেমি-ফাইনাল খেলার সম্ভাবনাও জাগতে পারে মাশরাফিদের।
১৮৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ধীরে ধীরে জয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। অ্যারোন ফিঞ্চের উইকেট হারালেও স্টিভেন স্মিথ আর ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটে ভর করে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ যখন ১৬ ওভারে ৮৩, তখনই নামে বৃষ্টি। এরপর সেই বৃষ্টি আর থামেনি। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪০মিনিটে বৃষ্টি শুরু। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি না থামায়, রাত ৯টা ১৮ মিনিটে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড।
Advertisement
বাংলাদেশের সংগ্রহটা ছিল খুবই মামুলি। মাত্র ১৮২। এই রান নিয়ে লড়াইয়ের পুঁজি পায় না বোলাররা। তবুও চেষ্টা করতে হয়। মোস্তাফিজ আর মাশরাফি শুরুতে প্রাণপন চেষ্টা করলেন। পারলেন না অসিদের ওপেনিং জুটিতে ভাঙন ধরাতে।
তবে ইনিংসের অষ্টম ওভারে বোলিং করতে এসেই জুটিতে ভাঙন ধরালেন রুবেল হোসেন। বাংলাদেশের এই গতি তারকার বলে লেগ বিফোর হয়ে ফিরে গেলেন অসি ওপেনার অ্যারোন ফিঞ্চ।
আউট হওয়ার আগে ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। মোস্তাফিজকে একের পর এক বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছেন ফিঞ্চ-ওয়ার্নার। রুবেলের বলে আউট হওয়ার আগে ২৭ বলে ১৯ রান করেছিলেন অ্যারোন ফিঞ্চ।
এর আগে, কেনিংটন ওভালে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিদায় নেন সৌম্য সরকার। জস হ্যাজেলউডের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ম্যাথু ওয়েডের হাতে ধরা পড়লেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। ১১ বল খেলে ৩ রান করতে পেরেছেন সৌম্য।
Advertisement
তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা ইমরুল কায়েসের ওপর আস্থা ছিল সবার। তামিমের সঙ্গে জুটি বেধে যদি বড় কোনো ইনিংস উপহার দেন! কিন্তু যারপরনাই ব্যর্থ হলেন ইমরুল কায়েস। প্যাট কামিন্সের বলে বলতে গেলে নিজের উইকেটটাই বিলিয়ে দিয়ে আসলেন ইমরুল। অফ স্ট্যাম্পের ওপর আসা বলটিকে কভারে পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যারোন ফিঞ্চের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন তিনি। দলীয় ৩৭ রানে পড়ল দুই উইকেট।
বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসার প্রতীক মুশফিকুর রহীম। আগে ম্যাচেও তার প্রমাণ রেখেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেটা আর পারলেন না মুশফিক। ব্যক্তিগত ৯ রানেই থামলেন তিনি। ময়েজেস হেনরিকসের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন বাংলাদেশি এই উইকেটরক্ষক।
আগের ম্যাচে খেলতে নেমে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ রান করেই সাজঘরে ফিরেছিলেন তিনি। আজ দেখেশুনেই খেলছিলেন এই অলরাউন্ডার। সম্ভাবনা জাগিয়েও ফিরে গেলেন সাকিব। ট্রাভিস হেডের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। বিদায়ের আগে ৪৮ বলে দুটি চারে ২৯ রান করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
অ্যাডাম জাম্পাও বল হাতে ঝড় তুললেন। ব্যক্তিগত প্রথম ওভারেই সাব্বির রহমান রুম্মনকে ফেরান তিনি। ৮ রান করে স্টিভেন স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন সাব্বির। তার বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারলেন না। মাহমুদউল্লাহও ফিরেছেন জাম্পার বলে বোল্ড হয়ে। তিনিও করেছেন ৮ রান।
উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও দারুণ ব্যাটিং করেছেন তিনি। কিন্তু আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হলো বাংলাদেশের ড্যাশিং এই ওপেনারকে। ৫ রানের জন্য টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হলো না তামিমের। ৯৫ রানেই থামেন তিনি। মিচেল স্টার্কের বলে হ্যাজেলউডের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তামিম। তার ১১৪ বলের ইনিংসটি সমৃদ্ধ ৬টি চার ও তিনটি ছক্কায়।
অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার মিচেল স্টার্ক। ৮.৩ ওভারে দুটি মেডেনসহ ২৯ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। অ্যাডাম জাম্পা নিয়েছেন দুটি। একটি করে উইকেট দখলে নিয়েছেন প্যাট কামিন্স, মইসেস হেনরিকস, ট্রাভিস হেড ও জস হ্যাজেলউড।
বিএ