রমজানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখার জন্য ভোক্তাদের পক্ষ থেকে সব সময়ই দাবি থাকে। কারণ এই সময়টায় এক শ্রেণির মুনাফালোভী মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। অথচ অন্য দেশে কোনো উৎসব পার্বণে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেওয়া হয় যাতে ভালোভাবে সবাই সেই উৎসবে অংশ নিতে পারে। আমাদের দেশে এর উল্টো চিত্র। এ ব্যাপারে অনেক কথা হলেও কাজের কাজ খুব কমই হয়। এবারো রমজানের আগেই প্রয়োজনীয় অনেক নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। রমজানের প্রথম সপ্তাহ পরও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। ভোক্তাদের পকেট কাটা যাবে আর প্রশাসনযন্ত্র তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে ন্যায্যমূল্যে ভোক্তারা পণ্য পায়।
Advertisement
রমজানে রাজধানীসহ সারাদেশেই ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে গত ১৫ মে থেকে ঝালকাঠি জেলা শহরে ৪ জন ডিলার বিক্রি শুরু করেছেন। টিসিবির চিনি ৫৫ টাকা, সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা ও মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে মূল্য নির্ধারণ করে। ক্রেতারা বাজার দর থেকে ২০ টাকার ব্যবধান বেশি দেখে চিনি, তেল ও ছোলা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ডাল নিয়ে বিপাকে পড়ছেন ডিলাররা। বাজারে মসুর ডালের মূল্য রয়েছে মান অনুযায়ী প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত কিন্তু টিসিবির ডালের মূল্য প্রতি কেজি ৮০ টাকা। এছাড়া বাজারে প্রতিকেজি হিসেবে চিনি ৭২ টাকা, সয়াবিন তেল ১০০ টাকা, ছোলা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে চাহিদার তুলনায় তেল সরবরাহ কম বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতা ও ডিলাররা। প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন বিক্রির জন্য ১ জন ডিলারকে ৩০০ কেজি চিনি, ২৫০ কেজি মসুর ডাল, ২৫০ লিটার সয়াবিন তেল ও ৬০০ কেজি ছোলা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ডিলাররা প্রথমে প্রতিদিন ৪০০ কেজি করে চিনি, ৪০০ কেজি করে ছোলা ও ২৫০ কেজি করে মসুর ডাল এবং ৪০০ লিটার তেল পেয়েছিলেন। পরে প্রতিদিন ছোলা ২০০ কেজি করে বাড়ানো হয়েছে। কমানো হয়েছে ২০০ লিটার তেল ও ১০০ কেজি চিনি। বাজারমূল্যের চেয়ে কমমূল্যে এবং চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করাই এই মুহূর্তের করণীয়।
টিসিবির এই কার্যক্রম আরো জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ বাজারে সমান্তরাল একটি সরবরাহ ব্যবস্থা থাকলে সিন্ডিকেট চক্র খুব বেশি সুবিধা করতে পারবে না। এ জন্য শুধু নামে কার্যক্রম চালালেই হবে না যথেষ্ট পণ্য যেন মজুদ থাকে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখাও জরুরি। আর টিসিবির পণ্য যেন সব জায়গাতেই পাওয়া যায় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে ব্যাপক প্রচারণাও চালাতে হবে মানুষজন যাতে জানতে পারে কোথায় টিসিবির পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। আর যে কোনো মূল্যে পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে হবে। রমজানে দ্রব্যমূল্য যেন ভোক্তাদের বাড়তি কোনো বিড়ম্বনার কারণ না হয় সেটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
এইচআর/এমএস
Advertisement