অর্থনীতি

ঈদের আগে গরুর মাংসের কেজি ৭শ ছাড়াতে পারে

ঈদের আগে আবারও গরুর মাংসের দাম বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মোট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম। একই সঙ্গে সমিতিতে যে পদে রয়েছেন সে পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রবিউল আলম বলেন, সরকার ২৬ রমজান পর্যন্ত গরু, খাসি, মহিষের মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ পর্যন্ত আমরা সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করব। কিন্তু এরপর মাংসের দাম কত বাড়বে তা আমরা বলতে পারব না। কারণ, গাবতলী গরুর হাটের অতিরিক্ত খাজনা আদায় ও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। তাই ইজারাদারদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মাংসের দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

মাংস ব্যবসায়ী সমিতির অফিসে সন্ত্রাসীরা তালা দিয়েছে- এমন অভিযোগ করে ৭ দিনের মধ্যে তা খুলে দেয়ার দাবি জানান রবিউল আলম। অন্যথায় এ সমিতি বিলুপ্ত করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

পদত্যাগ গাবতলী হাটের অতিরিক্ত খাজনা আদায়ে ঢাকা উত্তর সিটির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে না পারায় সংগঠনের মহাসচিবের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন রবিউল আলম।

Advertisement

তিনি বলেন, ১৫ মাস আন্দোলন করার পর সাড়া না পেয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলাম। ৪০ বছর এ সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আর পারছি না। উত্তরের মেয়রের সাক্ষাৎ চেয়ে পাইনি। ১০ মিনিট সময় দেন তিনি। চাঁদাবাজরা তাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।

পদত্যাগের ঘোষণার আগে তিনি বলেন, গরুর মাংসের ব্যবসা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও ইজারাদারদের দ্বন্দ্ব চলছে দীর্ঘ দিন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দেশবাসীকে যেন অল্প দামে মাংস খাওয়ানো যায়। তার জন্য সিটি কর্পোরেশনের ইজারা নির্ধারণ করে দেয়া হয় ৫০ টাকা। এটা কেউ মানছে না। অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করছে।

তিনি বলেন, চাঁদাবাজি বন্ধ হলে মাংসের দাম কমবে। প্রতি কেজি মাংস ৪শ টাকায় নিয়ে আসা যাবে। চাদাঁবাজি বন্ধে প্রায় ৬০০ আবেদন করেও কোনো সাড়া পাইনি। একটি আবেদনেরও তদন্ত করেনি কর্তৃপক্ষ। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সিটি কর্পোরেশেনের নির্ধারিত দাম থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। আমাদের অফিস তালা লাগানো থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না।

সংবাদ সম্মেলন বিভিন্ন অভিযোগ, সমস্যা ও দাবি তুলে ধরেন রবিউল আলম। তিনি বলেন, দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ গরু ও খাসির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। এর ফলে মাংস বিক্রি শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। দেশে অর্ধেকের বেশি মাংসের দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয় দিনের কর্মবিরতি পালন করেছিলেন মাংস ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

উল্লেখ্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মতামত নিয়ে রমজান উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম কেজি প্রতি ৪৭৫ টাকা নির্ধারণ করে দেন। এ ছাড়া বোল্ডার বা বিদেশি গরুর ক্ষেত্রে ৪৪০ টাকা, মহিষ ৪৪০ টাকা, খাসি ৭২৫ টাকা ও ভেড়া বা ছাগীর মাংস প্রতিকেজি ৬২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এসআই/এনএফ/আরআইপি