জয়পুরহাটের কালাই ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ধজেন্দ্রনাথ দাসের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ বাণিজ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে অধ্যক্ষ তার আত্মীয়-স্বজনদের প্রক্সি বানিয়ে আবেদন করান এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগও দেয়া হয়। বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে ১১ শূন্য পদে নিয়োগ দেয়াকে কেন্দ্র করে এ অভিযোগ উঠে।নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী অনেক বৈধ প্রার্থী প্রবেশপত্র না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তাদের অভিযোগ, মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে অধ্যক্ষের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যেই এটা করা হয়েছে। তাছাড়া প্রতি পদের বিপরীতে ৩ জন করে প্রার্থীর আবেদন করার নিয়ম থাকলেও কোন পদেই নিয়োগ বিধি মানা হয়নি।উল্লেখ্য, সরকারী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ বিধি অনুযায়ী অনার্স কোর্সের জন্য বাংলায় ৪ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৫জনসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে এবং বিএ/বিএসএস কোর্সের জন্য সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানে একজন করে প্রার্থীর কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান করে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে পদগুলোর বিপরীতে বাংলায় ৯ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৬ জন, সমাজবিজ্ঞানে ৮ জন এবং মনোবিজ্ঞানে ৬ জন আবেদন করেন । বাছাই শেষে বাংলায় ৮জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৬জন, সমাজবিজ্ঞানে ৬জন এবং মনোবিজ্ঞানে ৪ জনকে বৈধ প্রার্থী নির্বাচিত করা হলেও নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত হয় বাংলায় ৫জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৬জন, সমাজবিজ্ঞানে ৪জন এবং মনোবিজ্ঞানে ৩ জন।অধ্যক্ষ ধজেন্দ্রনাথ দাসের ভাগনে ও কাদিরপুর কামিল মাদ্রাসার প্রভাষক সুভাস চন্দ্র বাংলা প্রভাষক পদে প্রক্সি হিসেবে আবেদন করার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, আমি চাকুরির জন্যে নয়, সাপোর্টিং (প্রক্সি) দেয়ার উদ্দেশ্যে ওই নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলাম।নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সব ধরনের বৈধতা থাকা সত্ত্বেও প্রবেশপত্র না পেয়ে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে আবেদনকারী হাজেরা আক্তার সুইটি ও তার স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে অধ্যক্ষ তার মনোনীত প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যেই এমন কাজ করেছেন। এ বিষয়ে মোঠোফোনে কথা হয় নিয়োগ বোর্ডের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং বাংলা বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ড. সুজিত কুমারের সাথে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি ওই নিয়োগ বোর্ডে এক্সপার্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। নিয়োগ বিধি অনুসারে প্রতিটি পদের বিপরীতে ন্যূনতমপক্ষে ৩ জনের আবেদন থাকার কথা। কিন্তু ওই নিয়োগ বোর্ডে বাংলা বিষয়ে মোট ৫ জন প্রার্থী উপস্থিত ছিল। কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেখবে। অধ্যক্ষ ধজেন্দ্রনাথ দাস তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কী আত্মীয় কী অনাত্মীয় যে কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হিসেবে আবেদন করতে পারে। নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে প্রার্থীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১৪ লাখ টাকা নেয়ার ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোনো না কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণেই অনেক প্রার্থীদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হয়নি। এর পেছনে অন্য কোনো অসৎ উদ্দ্যেশ্য নেই। এ বিষয়ে কালাই ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগগুলো ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর বাইরেও অন্য কেউ আমার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করলে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসএস/আরআইপি
Advertisement